বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন
ফারাবি বিন সাকিব, ঈশ্বরদী-পাবনা:
“চলার পথে জীবন রথে, তুলেছেন শিক্ষা গুরু”। সেই শিক্ষা গুরু একটি হুইলচেয়ারের অভাবে নিদারুণ কষ্টে শিক্ষাদান করে চলেছেন। তারপরও বুক ভরা বল, উদ্দীপ্ত সাহস আর তেজস্বী মনবল নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করছেন ঈশ্বরদীর এক প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষক। জানা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষক রুবেল হোসেন। নেই হুইল চেয়ার, দু হাতের উপর ভর করেই চলেন তিনি।
একটি হুইল চেয়ারের অভাবে হাতের ওপর ভর করে চলাচল করাটা তার জন্য কষ্টসাধ্য। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, মাত্র ৬ বছর বয়সে জ্বরে দুটো পা প্যারালাইজ হয়ে যায় রুবেলের। এরপর থেকে সংগ্রাম মুখর জীবন শুরু। অদম্য সাহস ও জীবনের কঠিন সংগ্রামের মধ্যেও তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। আরও জানা যায়, উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মিরকামারী গ্রাম থেকে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক অধ্যায়ন শেষ করেন তিনি। পড়ে দাশুড়িয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝে থেকেও লেখাপড়ার অদম্য ইচ্ছা তাকে এগিয়ে চলতে উৎসাহিত করে।
এখন রুবেল হোসেন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে আসতে বেশ কষ্ট হয় রুবেলের। হাতে ভর দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয় তাকে। মানুষই মানুষের জন্য, সমাজের বিত্তবানরা যদি এই মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকের জন্য একটু সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দেন তবে শিক্ষক রুবেল উপকৃত হতেন।
দাশুড়িয়া এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম জহুরুল ইসলাম জানান, আমরা স্কুল থেকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে রুবেলকে মাসে ৬ হাজার টাকা সম্মানী দেই। রুবেল হোসেন বলেন, তার এক শিশু পুত্র ও এক কন্যা আছেন। হুইল চেয়ার না থাকায় চলতে বেশ কষ্ট হয়। ঈশ্বরদী উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমরা স্কুলে খোঁজ নিয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি।