সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৮ অপরাহ্ন

ইয়াবা ব্যবসায় এখন সুন্দরী নারী!

ইয়াবা ব্যবসায় এখন সুন্দরী নারী!

 খায়রুল আলম রফিক :

সুন্দরী, স্মার্ট, চোখে কালো চমশা, পরনে ঝলমলে পোশাক। প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে ঢাকা,ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ফরিদপুর থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এমন দু’শতাধিক নারী। পর্যটক বেশে এসব নারী প্রতিনিয়ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা কারবার। নামিদামি পর্যটক মনে করে অনেক সময় এসব প্রাইভেট গাড়ি তল্লাশি করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ইয়াবা পাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হার্ডলাইন অবস্থানের কারণে ইয়াবা গডফাদার সিন্ডিকেট ভিন্ন কৌশলে মাঠে নেমেছে। আর কৌশলের অংশ হিসাবেই সম্প্রতি ঢাকা,ময়মনসিংহ, গাজীপুর, ফরিদপুর ও চট্টগ্রামের হাইফাই সোসাইটির মেয়েদের কন্ট্রাকের মাধ্যমে ইয়াবা পাচারে নিয়োগ করেছে এ সিন্ডিকেট। ঢাকায় স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের হাতে ১ লাখ পিস ইয়াবা নিয়ে আটক কক্সবাজার জেলা যুবদলের সহ সভাপতি নেজাম উদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঢাকার অভিজাত পাড়ার শীতল ও ময়মনসিংহের ত্রিশাল বীররামপুর এলাকার চাঁদনী নামের এক নারীর নাম এখন আলোচনায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শীতল নামের সুন্দরী এ নারী নেজাম উদ্দিনের ইয়াবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। তারা ঢাকা, গাজীপুর ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর এলাকায় মাদক ডেলিভারি করে। অনুসন্ধানে জানাগেছে, ওই দুই নারীকে নিয়ে প্রায় সময় প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে ইয়াবা পাচার করতো নেজাম উদ্দিন এবং ত্রিশালের এক মাফিয়া ইয়াবা ডন ।

মূলত সুন্দরী শীতলের মাধ্যমেই ঢাকা,ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইয়াবা ডেলিভারি দিত নেজাম উদ্দিন সিন্ডিকেট ত্রিশালের কথিত ইয়াবা ডন । এ সিন্ডিকেট উখিয়া ও টেকনাফ থেকে ইয়াবা কিনে ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর সরবরাহ করতো। কিছুদিন আগে টেকনাফ নয়াপাড়া এলাকায় বিজিবি সদস্যরা টহলরত অবস্থায় সন্দেহজনকভাবে কক্সবাজারমুখী একটি সিএনজি তল্লাশি চালিয়ে ভ্যানেটি ব্যাগে কৌশলে লুকিয়ে ১০ হাজার ৮০ পিস ইয়াবাসহ ইসমত আরা (১৯) নামের এক সুন্দরী মহিলাকে আটক করেছে। আটক ইসমত আরা টেকনাফ নয়াপাড়া এলাকার মো. আবদুল্লার স্ত্রী। বিজিবি জানিয়েছে, আটক মহিলা টেকনাফে থেকে ইয়াবা নিয়ে ঢাকা,গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুরসহ বিভিন্ন পাইকারি মাদক ব্যবসায়ীকে সরবরাহ করতো।

শুধু, শীতল বা ইসমত নয়, এরকম প্রায় ২ শতাধিক সুন্দরী নারী কেও কেও বোকরা পড়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত। ঢাকা, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, চট্টগামের হাইফাই সোসাইটির নারীরা ছাড়াও এলাকার সুন্দরী স্মার্ট মেয়েদের ইয়াবা পাচার কাজে নিয়োজিত করেছে সিন্ডিকেটগুলো। বিশেষ করে পর্যটক বেসে প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে সিন্ডিকেটের হয়ে পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা। চেকপোস্টগুলোতে পর্যটক মনে করে প্রাইভেট গাড়িগুলো অনেক সময় তল্লাশির বাইরে রাখা হয়। তাছাড়া প্রাইভেট গাড়িতে থাকা সুন্দরী নারীদের তল্লাশি চালাতেও অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিব্রতবোধ করে। যে কারণে সিন্ডিকেট সদস্যরা হাইফাই সোসাইটির নারীদের নিরাপদ মনে করে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত করেছে। এসব সুন্দরী নারীরা উখিয়ার বেশকিছু সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, শুধু নারী নয়, পুলিশ সমসময় তৎপর রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা আটক করা কঠিন। তবুও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে

শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © 2022 Protidiner Kagoj