শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা :
ভারতের দুই জন নামকরা চিকিৎসক। একজন সিনিয়র কনসালন্টেন্ট ডা. দীপক সুবরামনিয়াম, আরেকজন ডা. রোপেস কুমার। একজন সার্জারি ও আরেকজন নিউরো সার্জারি বিশেষজ্ঞ। ভারতের চেন্নাইয়ের চিকিৎসক তারা। পুলিশ সদস্যদের ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাদের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। এজন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পের প্রয়োজনীয় সব আয়োজন করেছিল রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে তারা ভিসা পাননি। এ কারণে শেষ মুহূর্তে এসে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প বাতিল করতে হলো।
পুলিশ হাসপাতাল সূত্র বলছে, এর আগে সিঙ্গাপুর, চীন থেকে একাধিকবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আনা হয়েছে। মেডিক্যাল ক্যাম্প হয়েছে। এমনকি ভারত থেকেও একাধিকবার চিকিৎসকরা মেডিক্যাল ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার তারা কেন ভিসা জটিলতার কারণে আসতে পারলেন না তা কারও বোধগম্য হচ্ছে না।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, চেন্নাইয়ের নামকরা দুজন সার্জারি ও নিউরো সার্জারি বিশেষজ্ঞ দুই চিকিৎসক আসবেন। মেডিক্যাল ক্যাম্পে তারা উপস্থিত থাকবেন। পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফ্রি চিকিৎসা দেবেন। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অবগত করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনেক পুলিশ সদস্য ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষে তাদের হতাশ হতে হয়েছে।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) সাইফুল ইসলাম সানতু জানান, ভারত থেকে প্রথমে মেডিক্যাল ক্যাম্পের জন্য সার্জারি ও নিউরো সার্জারি বিভাগের ওই দুই চিকিৎসকের আসার কথা বলা হয়। পরে তারাই জানিয়েছেন ভিসাজনিত জটিলতায় আসতে পারবেন না। কিন্তু কী ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটা জানা যায়নি।
পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, আর্থিক ও ছুটিজনিত কারণে পুলিশের নিম্ন পদে চাকরিরত সদস্যরা বিদেশে গিয়ে ভালো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন না। এ কারণে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হওয়া তাদের কাছে অনেক বড় একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই ক্যাম্প বাতিল হলো। ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পটি বাতিল না করে জটিলতা দূর করে আবারও আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই।
পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, বাংলাদেশে অন্যান্য বাহিনীর নিজেদের অত্যাধুনিক মেডিক্যাল কলেজ ও উন্নতমানের নিজস্ব হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু পুলিশের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল ছাড়া আর কিছুই নেই। আগে এটির নাজুক অবস্থা থাকলেও সম্প্রতি এই হাসপাতালকে কিছুটা আধুনিক করা হয়েছে। তবু প্রায় দুই লাখের ওপর পুলিশ ও তাদের পরিবারের জন্য এটি পর্যাপ্ত নয়। জটিল রোগে আক্রান্ত হলে নিম্ন পদের অনেক পুলিশ সদস্যই অর্থাভাবে সুচিকিৎসা করাতে পারেন না। বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা করাও অনেক ব্যয়সাধ্য। সেখানে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প করানো একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ ছিল। এটি কোনোভাবেই বাতিল করা উচিত হয়নি।