শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: গত তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো টাকা ছাপায়নি বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, আমরা টাকা না ছাপিয়েই তারল্য সংকট সমাধান করছি। সোমবার (১১ নভেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁয়ে তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা। আহসাব এইচ মনসুর বলেন, অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আমরা টাকা ছাপাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত (গত ৩ মাসে) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে কোনো কিছু দেওয়া হয়নি এবং হবে না।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তবে এখন কেনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ হয়ে না যায়, সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
ডলার সংকট প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আমাদের রিজার্ভ থেকেও কোনো ডলার বিক্রি করিনি। আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে দেখেছি, বাজারে এখন ডলারের কোনো সংকট নেই। কেউ টাকা নিয়ে এলেই ডলার দিতে পারছে ব্যাংক। এখন বিপিডিবি তাদের ডলার পেমেন্টের জন্য টাকা দিতে না পারাটা তো আমার সমস্যা নয়।
ব্যাংকগুলোর অ্যাসেট কোয়ালিটি মূল্যায়নে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে অডিট করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের সংস্কার করতে হয়তো ২-৩ বছর সময় লেগে যাবে। তবে এই সময়ের মধ্যে ব্যাংক খাতকে একটা স্ট্যাবল জায়গায় নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি। দূর্বল কিছু ব্যাংককে আমাদের এখন রিক্যাপিটালাইজেশন করতে হবে, আবার কিছু ব্যাংককে মার্জার করা লাগতে পারে। এর জন্য নির্দিষ্ট আইন থাকা প্রয়োজন। আমরা এখন সেগুলোই তৈরি করছি।
ব্যাংক খাত নিয়ে গভর্নর আরও বলেন, বিগত সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমাদের ব্যাংক খাত। তবে দ্রুত সব সমাধান হবে না। আমাদের ব্যাংক খাতে নাজুক অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। দ্রুত সংস্কার বা সমাধান চাইলে আমার চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। কারণ এক ব্যাংকের ২৭ হাজার কোটি টাকার অ্যাসেট থেকে এক পরিবারই ২৩ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। সেখানে আমার হাতে ম্যাজিক নেই। তবে কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না, এটা বলতে পারি। দুর্বল ব্যাংকে টাকা তুলতে পারছে না, এ কারণে তাদের তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সব সমাধানও হয়ে যাবে।
যেকোনো কোম্পানি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, বেক্সিমকোয় রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়নি। বেক্সিমকোতে রিসিভার দেওয়া মানে বন্ধ নয়, বরং এটা সচল করা হচ্ছে। কারণ, গত কয়েক মাস বেক্সিমকোর বেতন-ভাতা সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে৷ যেকোনো কোম্পানি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে।
বেক্সিমকোকে সচল করার জন্য কোম্পানিটিতে রিসিভার বসানো হয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, তারা কয়েক মাস শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারত না। এখন রিসিভার বসানোর মাধ্যমে সচল করা হবে। একইসঙ্গে বেক্সিমকোর রপ্তানির টাকা যেন বেহাত না হয়, দেশের টাকা যেন দেশেই ফিরে আসে, দেখতে হবে।