Noman Group Advertisement

বিতর্কিত’ সেই সাব-রেজিস্ট্রার শফিউল বারী এখন মুক্তাগাছায়

রেজাউল করিম রেজা , ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

বিতর্কিত সেই সাব-রেজিস্ট্রার এসএম শফিউল বারী নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, খিলগাঁওয়ের সাব-রেজিস্ট্রার  ছিলেন। তিনি উর্ধ্বতন মহলকে নানাভাবে ম্যানেজ করে খণ্ডকালীন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সাব রেজিস্টার এসএম শফিউল বারী বর্তমানে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা হিসেবে কর্মরত। তিনি যোগদানের পর স্থানীয় দলিল সমিতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে জমির ক্রেতা ও বিক্রেতারা। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সরকারের মোটা অংকের অর্থ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। 

এর আগে সাব রেজিস্টার এস এম শফিউল বারী  প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের একটি (ভিডিও) ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক সাব-রেজিস্ট্রার শফিউল বারী, অফিস সহকারী সুমিতা রানী ও রূপগঞ্জের ওমেদার জাকির হোসেনকে প্রত্যাহার করে নেয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। অপরদিকে ক্ষুব্ধ হয়ে ছালেহ উদ্দিন আহমেদ নামে একব্যক্তি চলতি মাসের ২রা জুলাই শফিউল বারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, আইন বহির্ভূতভাবে একটি দলিলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। দলিল নং-১৪,৭৫২। তারিখ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ইং। এতে সরকার ৬ লাখ, ৪৬ হাজার, ৯৯০ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তবে ওই অর্থ আত্মসাত করে ফেলেন এসএম শফিউল বারী।

এনিয়ে চলতি বছরের গত বছর ৯ই ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরদিন ১০ই ফেরুয়ারি সাব-রেজিস্ট্রার আইন বহির্ভূতভাবে আড়াইহাজার শাখায় সোনালী ব্যাংকে দুইটি প্রে-অর্ডার ও এনআরবি ব্যাংক একটি প্রে-অর্ডারের মাধ্যমে আত্মসাতের ওই টাকা জমা করেন। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে এসএম শফিউল বারী অফিস করছেন না। 

নাম না প্রকাশের শর্তে দলিল লেখক সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘বিতর্কিত সাব-রেজিস্ট্রার শফিউল বারী জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সরকারের মোটা অংকের অর্থ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। এতো বড় অপরাধ করে তিনি কিভাবে মুক্তাগাছার মত গুরুত্বপূর্ণ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদানের সুযোগ পেলেন। এমন বিতর্কিত সাব রেজিস্টার যোগদানে সবাই হতবাক হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের এক দলিল লেখক জানান, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সন্দেহ করে তাকে হয়রানি করছেন। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুক্তাগাছা সাব রেজিস্টার এস এম শফিউল বারী দীর্ঘ ১০ বছরের প্রায় আড়াই'শো কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজধানীর গুলশানে তিনটি বাড়ি, উত্তরায় দুইটি ও ৮টি ফ্ল্যাট নামে- বেনামি ক্রয় করেছেন। খিলগাঁও সাব রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় বস্তায় ভরে ঘুষ নিতেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। বস্তায় ভরে ঘুষ নেন সাব রেজিস্টার এস এম শফিউল বারী। জানতে চাইলে এসএম শফিউল বারী জানান, বস্তায় ভরে ঘুষ নেওয়া কথা সত্য নয়। এগুলোতো হাস্যকর কথা। কিভাবে সম্ভব। নামাজের সময় হয়ে গেছে এখন। নামাজের পরে কথা বলবো।

Link copied!
Advertisement