Noman Group Advertisement

মাথা গোজার ঠাঁই পেলো ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের পরিবার

ছবি: প্রতিদিনের কাগজ

মাথা গোজার ঠাঁই পেলো, ছাত্র-আন্দোলনের সহিংসতায় নিহত নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া গ্রামের জাকির হোসেনের পরিবার। জাকির হোসেনের কবরের পাশে নির্মান হবে ঘর। এই ঘর নির্মানের জন্য আর্থিক বরাদ্দ দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যান পরিষদ। শুক্রবার দুপুরে জাকির হোসেনের মায়ের কাছে ঘর নির্মানের সামগ্রী তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর। 

জাকির হোসেন ওই এলাকার মৃত ফজলু মিয়া ও মিছিলি বেগমের একমাত্র ছেলে। জীবন জীবিকার তাগিদে মা কে নিয়ে ঢাকায় কাজ করতে চলে যান জাকির হোসেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের কাঁচপুর সেতুর কাছে ঠিকাদারের অধীনে ওয়াসার পানির লাইন মেরামতের কাজ করতেন তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ ও সারাদেশে কারফিউ জারি হওয়ায় বাসায় ফিরতে পারছিলেন না। গত ২১ জুলাই বিকেলে কাজ শেষে সহকর্মীদের সাথে পাশের একটি দোকানে নাশতা খেতে যান জাকির। এ সময় হঠাৎ একটি গুলি এসে লাগে তার পিঠে।

গুলি লাগার পর দৌড়ে পাশের একটি গলিতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জাকির। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। পরে সহকর্মীরা দ্রুত মরদেহ নিয়ে যান জাকিরের মায়ের কাছে বাড্ডা নতুন বাজার এলাকায়। মা রাতেই মরদেহ নিয়ে রওনা হন গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার বাকলজোড়া ইউনিয়নের বাকলজোড়া গ্রামে। পরদিন সকাল ১০টায় জানাজা শেষে দাফন করা হয় জাকির হোসেনের মরদেহ। 

একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে না থাকায়, তার মা এ বাড়ি ও বাড়ি গিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। এ বিষয়টি নজরে আসে দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের। পরবর্তিতে মায়ের ইচ্ছা মতোই ছেলের কররের পাশে একটি ঘর নির্মানের জন্য অর্থ বরাদ্দ আসার পর ওই স্থানে ঘর নির্মানের ব্যবস্থা নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। 

জাকির হোসেনের মা মিছিলি বেগম বলেন, ভিটেমাটি না থাকায় ছোট জাকিরকে নিয়ে ঢাকায় চলে গিয়েছিলাম। মানুষের বাসায় কাজ করে ছেলেকে বড় করেছি, কাজ শিখিয়েছি। ছেলের আয়ের টাকা দিয়ে কিছুদিন আগে গ্রামে ঘর তৈরির জন্য জায়গা কিনেছি। কিন্ত ঘর নির্মানের আগেই আমার ছেলে দুনিয়া থেকে চলে গেলো। বর্তমানে ছেলের কবরের পাশে একটা ঘর নির্মানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, জাকির হোসেনের মা এ বাড়ি ও বাড়ি রাত্রি যাপন করছে এমন খবর পাই আমি। পরবর্তিতে ঘরের জন্য আর্থির বরাদ্দের চাহিদা দিলে জেলা প্রশাসক স্যার বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। এরই প্রেক্ষিতে আজকে সামগ্রী হস্তান্তর করছি, আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত জাকির হোসেনের মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে পারবো। 

এ সময় উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মাসুল তালুকদার, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটির যুগ্ন-আহবায়ক রাতুল খান রুদ্র, হীরা আব্বাসী, জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। 

 

Link copied!
Advertisement