Noman Group Advertisement

কাশ্মীরে হামলায় গোয়েন্দাদের যেভাবে ‘বোকা’ বানানো হয়

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে কয়েকশ মানুষকে গ্রেপ্তার করলেও হামলাকারীদের কাউকে এখনও ধরতে পারেনি তারা। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানায়, সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের জন্য কয়েকটি বিশেষ ‘চিনা অ্যাপ’ ব্যবহার করছে। পেহেলগামে হামলার পরিকল্পনাও হয়েছিল ওই অ্যাপের মাধ্যমেই। শুধু তাই নয়, হামলাকারীরা চিনা স্যাটেলাইট ফোনও ব্যবহার করেছিল। 

গোয়েন্দারা পেহেলগামের ঘটনার দিনই ওই ধরনের একটি ফোনের উপস্থিতি টের পেয়েছেন। কিন্তু তারা বিষয়টি বুঝতে পারেনি। 

আনন্দবাজার জানায়, পেহেলগামে ঘটনার দিন ওই এলাকাতেই একটি চিনা ‘স্যাটেলাইট ফোন’ ছিল। গোয়েন্দাদের র‌্যাডারে তা ধরাও পড়েছে। কিন্তু ফোনটি উদ্ধার করা যায়নি। তবে, হামলাকারীরা এই ফোন ব্যবহার করেই নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা চালিয়ে গিয়েছিল। 

সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের জন্য যে মোবাইল অ্যাপগুলো ব্যবহার করেছিল সেগুলো ভারতে নিষিদ্ধ। ২০২০ সালে গালওয়ানে চিনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ওই অ্যাপগুলো নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। 

অ্যাপগুলোর তথ্য গোপনের পন্থা অনেক শক্তিশালী এবং আধুনিক। ফলে এগুলো সহজে হ্যাক করা যায় না। এই অ্যাপের মাধ্যমে কী কথাবার্তা চলছে, বাইরে থেকে সহজে তার নাগাল পাওয়া যায় না। সেই কারণেই এই অ্যাপগুলো বেছে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

এদিকে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।

পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান। 

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। মোদি যদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরা হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে। 

এদিকে, ইরান এবং সৌদি আরব উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইরান ও বাংলাদেশ প্রকাশ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংযম এবং সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছেন।

Link copied!
Advertisement