Noman Group Advertisement

অস্ত্র হাতে বিএনপি কর্মীদের হামলা, চর দখলের ষড়যন্ত্রে স্থানীয়দের প্রতিরোধ

মামুন রাফী , নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

ছবি: প্রতিদিনের কাগজ

দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়েছিল খাল দখল করতে সাধারণ জনগণ পিটিয়ে তুলে দেয় নৌবাহিনীর হাতে। বেধে রাখা হয় বিদ্যুতের পিলারের সাথে। উত্তেজিত জনতা ঘিরে রাখে তাদেরকে। পরে নৌবাহিনী গিয়ে অবরুদ্ধ দুই জনকে উদ্ধার করে।

চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নোয়াখালীর  হাতিয়া উপজেলা  জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে। সোমবার রাতে অবরুদ্ধ দুইজনকে নৌবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করে হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করেন।

আটককৃতা হলেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড চরহেয়ার এলাকার মজিবল হকের ছেলে আরিফ হোসেন । একই গ্রামের মোল্লা বাজার এলাকার মোঃ আশ্রাফের ছেলে  মোঃ আসিফ।

স্থানীয়রা জানান, জাহাজমারা আমতলী বাজারের পশ্চিমপাশে রাস্তার চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এক গ্রুপ অনেকদিন থেকে রাস্তার চরটির দখল নিয়ে বন বিভাগের কর্তৃক সৃজিত বাগান থেকে মধু আহরণ ও খালে জাল ফলে  মাছ ধরে আছেন। ঘটনার দিন বিকেলে অন্য পক্ষের লোকজন চরটির দখল নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। পরে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও দুই জনকে আটক করে তারা বাজারে নিয়ে আসে। পরে আটক দুইজনকে বিদ্যুতের পিলারের সাথে বেঁধে রাখে।

স্থানীয়রা আরো জানান, ঘটনাটা অনেকটা শক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে ঘটেছে। চরের খাল দখল নিয়ে সাধারণ জনগণ এর সাথে কয়েকদিন পর্যন্ত হট্রগোল হচ্ছে নিয়মিত আজকে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশানের ইন্দনে, জহির সেরাং, নকিব, রাকিব,   আজাদ, কেফায়েত, সোহেল এর নেতৃত্বে  ডাকাত দল বগী দা নিয়ে খাল দখল করতে এসেছিলো  এরা মানুষের মনে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ওপেন বগি দা নিয়ে মোল্লা বাজার থেকে পায়ে হেটে আমতলী বাজারে যায়, সেখানে জিল্লু নামের একজন যুবক ওদের বগী দা নিয়ে হাটা দেখে ভিডিও করতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে জিল্লুকে থাবায়-সোবায় তার মোবাইল নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আরও জানায়, ১৫-২০ জন মিলে ঐ খালে জাল বসিয়ে সেখানে বিভিন্ন নেতাদেরকে গাল মন্দ করে তারা চলে আসে। সেখানে তাদের কেউ কিছু বলেনি স্থানীয়রা। সাধারণ  মানুষ আতঙ্কে চুপ ছিলো, এরা যখন আবার আমতলী বাজার দিয়ে হেটে যাচ্ছিলো তখন জিল্লু এবং জিল্লুর বাবা তাদের মোবাইল দিতে বলেছে। তখন তারা বগি দা বের করে তাদের আক্রমণ করে। এতে আহত হয় সৈকত, মাকসুদের রহমান, এতে বাজারের স্থানীয় মানুষ তাদেরকে প্রতিহত করে এবং বগি দা সহ সাধারণ জনগণ নৌবাহিনীর হতে তুলে দিয়েছে।

সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান নৌবাহিনীর একটি টিম। তারা ঘটনা স্থলে উত্তেজিত জনতাকে নিবৃত করে অবরুদ্ধ দুইজনকে থানায় নিয়ে আসে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের দুইটি গোয়েন্দা টিমের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসে।

বন বিভাগের সূত্রে জানা যায়, এই বছর কাউকে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের লিষ্ট ভুক্ত করা হয়নি যে কারা কারা বনের সুবিধা ভোগ করবে কিন্তু যাদের পাশে রয়েছে তারা ভাগ করবে। 

স্থানীয়রা কয়েকজন অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান তাদের থেকে টাকা নিয়েছে মধু কাটে বলেই। এমনি খাল ব্যাবহার করতে হলেও তাকে টাকা দিতে হবে বলে ও অভিযোগ করেন তারা। 

এদিকে আসিফের পিতা আশ্রাফ জানান, তার ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী পর্যন্ত কখনো করা হয়নি। অথচ তাকে ডাকাত বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তার ছেলে নিরাপরাধ বলে দাবি করেন তিনি।

আমতলী বাজার বনিক সমিতির সভাপতি মো. লিটন জানান, চরের আধিপত্য নিয়ে দুগ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজনকে আটক করে রাখা হয়েছে। পরে নৌবাহিনী এসে তাদেরকে নিয়ে যায়। এখানে ডাকাতের সাথে কেউ জড়িত আছে কিনা তার জানা নাই।

এই বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান অস্বীকার করে বলেন আমারে ইন্দনে কোন কিছু হয়নি, আমি কাউকে বলিনি বগি দা নিয়ে খাল দখল করতে। তবে খাল দখল করতে যাওয়া লোক গুলো তার ছিলো সেটা তিনি স্বীকার করেছেন। 

এ ব্যাপারে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, আহত দুই জনকে নৌবাহিনীর সদস্যরা থানায় দিয়ে আসেন। এদের বিরুদ্ধে ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

 

Link copied!
Advertisement