বগুড়ার শিবগঞ্জে পুলিশের হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় রিজ্জাকুল ইসলাম রাজু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছে এলাকাবাসী। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিবগঞ্জ পৌরসভার চকভোলাখাঁ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রিজ্জাকুল ইসলাম রাজু চকভোলাখাঁ গ্রামের বদর উদ্দিন বদরের ছেলে। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, একাধিক মামলার আসামি রিজ্জাকুল ইসলাম রাজু তার বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় চকভোলাখাঁ গ্রামের বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা পুলিশের চোখেমুখে কাঁদা ছুড়ে এবং ধস্তাধস্তি করে রাজুকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
শিবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুন জানান, “আমরা পাঁচজন এসআইসহ থানা থেকে গিয়ে রাজুকে গ্রেপ্তার করি। থানায় ফেরার পথে গ্রামের অনেক নারী আমাদের চোখেমুখে কাঁদা ছুড়ে এবং ধস্তাধস্তি করে তাকে ছিনিয়ে নেয়।”
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসআই মামুনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল চকভোলাখাঁ গ্রামে গিয়ে রিজ্জাকুল ইসলাম রাজুকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু থানায় ফেরার সময় গ্রামের নারী-পুরুষরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।”
ওসি শাহীনুজ্জামান আরও জানান, রিজ্জাকুল ইসলাম রাজুর বিরুদ্ধে নাশকতা, বিস্ফোরক দ্রব্য, হামলা, ভাঙচুরসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন মামলা রয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ রাজুকে পুনরায় গ্রেপ্তার এবং হাতকড়া উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত তাকে আটক বা হাতকড়া উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, রিজ্জাকুল ইসলাম রাজু এলাকায় বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যা এই ঘটনার কারণ হতে পারে। তবে পুলিশের ওপর হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :