মনোনয়ন দ্বন্দ্বে ময়মনসিংহে উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন

নিজস্ব সংবাদদাতা , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৪১ এএম

ছবি- (কোলাজ) প্রতিদিনের কাগজ

ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপি’র মনোনয়নকে ঘিরে দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ভয়াবহ সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার বিকেলে গৌরীপুর পৌর শহরের পাটবাজার এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেন ও আহ্বায়ক তায়েবুর রহমান হিরণ সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেন। মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক তায়েবুর রহমান হিরণ। মনোনয়ন বঞ্চনার পর থেকেই হিরণ সমর্থকরা বিক্ষোভ, রেলপথ ও সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।

রোববার বিকালে ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেনের সমাবেশ ছিল হোস্টেল মাঠে, অন্যদিকে একই সময়ে হিরণের কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল মধ্যবাজার এলাকায়। দুই সমাবেশে যাওয়ার পথে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে মঞ্চ, চেয়ার, মোটরসাইকেলসহ দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পরবর্তীতে ভাঙচুর করা দোকান থেকে মালামাল বের করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

হিরণপন্থীদের দাবি, সংঘর্ষে তাদের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন, অপরদিকে ইকবালপন্থীদের দাবি তাদের ১০ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে শনিবার রাতে ইকবাল হোসেনের সমর্থক ও জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পাপুর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দু’টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে হিরণ সমর্থকরা। এ ঘটনায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—শামীম (২৯), মামুন (২৫), হাবিব (১৯) ও আফাজ (২২); তারা স্থানীয় কাউরাট ও পূর্বদাপুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

এ বিষয়ে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পাপু বলেন, “ইকবাল হোসেনের পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণেই আমার কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। দুইটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দুইজন আহত হয়েছেন। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”

অন্যদিকে, ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেন বলেন, “যে বা যারাই এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আহমেদ তায়েবুর রহমান হিরণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশীষ কর্মকার বলেন, “দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মঞ্চ, চেয়ার, মোটরসাইকেল ও দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। ভাঙচুর করা দোকান থেকে মালামাল বের করে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে।”

এদিকে, গৌরীপুর ছাড়াও ফুলবাড়িয়া ও ত্রিশালেও বিএনপি’র মনোনয়ন নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কেন্দ্রীয় মনোনয়ন নিয়ে জেলা জুড়ে দলের অভ্যন্তরীণ সংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

Advertisement

Link copied!