কক্সবাজারের পেকুয়ায় ক্রয়কৃত বসতভিটা রেজিস্ট্রি না দেওয়ার জের ধরে লাশ দাফনে বাধা দেন জমি ক্রয়সূত্রে মালিক জসিম উদ্দিন গং। এ নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে এক পক্ষের ছুরিকাঘাতে দুজনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুর ১টায় উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বারাইয়াকাটা এলাকায়।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, মৃত ফিরোজ আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৮), আবুল কাশেম (২৮) ও জসিম উদ্দিনের স্ত্রী নাইমা সুলতানা (২২)। আহতদের পেকুয়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। লাশ দাফন না হওয়া পর্যন্ত কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পুলিশ নিষেধ করে। পরে এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় লাশ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ফাঁশিয়াখালী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিগত প্রায় তিন বছর আগে ওই এলাকার রশিদ আহমেদের কাছ থেকে আপন ভাই মৃত ফিরোজ আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন গং ঘরসহ বসতবাড়ি ক্রয় করে নেয়। ক্রয়কৃত জায়গায় রেজিস্ট্রি দেওয়া নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
গতকাল সকালে রশিদ আহমদ (৭০) চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। তবে রশিদ আহমদ মারা যাওয়ার আগে দু'পক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একাধিকবার সালিশি বৈঠক হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, সম্প্রতি রশিদ আহমেদের ছেলে সৌদি প্রবাসী মো. নুরুন্নবী দেশে ফিরে এসে বসতভিটা বিক্রি রেজিস্ট্রি দেওয়া নিয়ে তাঁর পিতাকে বাধা দেন। এ নিয়ে আপন চাচাতো-জেঠাতো ভাইদের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরেই সোমবার দুপুরে বারাইয়াকাটা মসজিদের সামনে এ ঘটনা সংঘটিত হয়।
আহত জসিম উদ্দিন বলেন, চাচা মারা যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা স্থানীয় কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে কীভাবে ক্রয়কৃত জমিটি পায়, এ বিষয়ে কথা বলছিলাম। প্রতিমধ্যে মো. নুরুন্নবী সহ ৭/৮ জন এসে আমাদের সাথে বচসার মধ্য দিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে মো. নুরুন্নবী হাতে থাকা ছুরি দিয়ে আমাকে আঘাত করে। আমাকে বাঁচাতে ছোট ভাই এগিয়ে আসলে ফরহাদ, রিফাত, সোয়াইব ও জোনাইদ ছোটভাইকে বেধড়ক মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় টমটম নিয়ে হাসপাতালে পাঠায়।
আহত আবুল কাশেম বলেন, হামলাকারীরা আমার মোবাইল ও নগদ দেড় লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে মৃত রশিদ আহমদের ছেলে সৌদি প্রবাসী মো. নুরুন্নবী বলেন, বিরোধীয় জমির বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান। আজকে আমার বাবার লাশ দাফনে বাধা সৃষ্টি করেছে। লাশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আমাদের ঘরে ঢুকে হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল। তাঁদের হামলায় আমাদের পরিবারের দুজন আহত হয়েছে।
পেকুয়া থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা সিরাজুল মোস্তাফা জানান, বারাইয়াকাটা নামক একটি পাওনা টাকা ও বসতবাড়ির বিরোধের জেরে একটি লাশ দাফনে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পরিস্থিতি শান্ত আছে। এখনো কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :