জাবিপ্রবির প্রথম স্বপ্নের সারথি: বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত আরিফ

ইয়াসির আরাফাত , জাবিপ্রবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:৫৮ পিএম

জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জাবিপ্রবি) থেকে এই প্রথম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেন মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ। গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে প্রকাশিত ৪৯তম স্পেশাল বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে তিনি শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ জাবিপ্রবির সমাজকর্ম বিভাগের ১ম ব্যাচের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তিনিই প্রথম শিক্ষার্থী, যিনি বিসিএস ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে এই গৌরব অর্জন করলেন।

আরিফুল ইসলামের সাফল্য এবারই প্রথম নয়। তিনি এর আগেও একাধিক সরকারি চাকরির পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। জানা গেছে, ৪৯তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পাশাপাশি তিনি ৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এছাড়া তিনি তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশনের (পেট্রোবাংলা) সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন, ৯ম গ্রেড) এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সহকারী পরিচালক (৯ম গ্রেড) পদেও নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার গোবিন্দপুর গ্রামের মো. জসিম উদ্দিন ও মোছা. আকিদা বেগমের মেধাবী সন্তান মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ। লক্ষীপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার পর ভর্তি হন জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগের ১ম ব্যাচে।

আরিফ বলেন, ‘সৎভাবে দেশের সেবা করা, বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটানো এবং তাদেরকে গর্বিত করা সন্তান হিসেবে এটুকুই আমার স্বপ্ন।’

আরিফের এই সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আনন্দিত ও গর্বিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য তার এই অর্জন অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান মো. অলি উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তার এই কৃতিত্ব একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এটি তার নিষ্ঠা, অধ্যবসায় এবং একাডেমিক উৎকর্ষতার প্রতিফলন ঘটায়, যা সমগ্র জাবিপ্রবি পরিবারের জন্য অত্যন্ত গর্ব এবং অনুপ্রেরণা বয়ে এনেছে। আমরা তার ভবিষ্যতের প্রচেষ্টায় অব্যাহত সাফল্য কামনা করি এবং আশা করি তার ধারাবাহিক অর্জন বর্তমান এবং ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের উৎকর্ষ অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করবে।’

জাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, ‘যেখানে জ্ঞানের প্রদীপ প্রথম জ্বলে ওঠে, সেখান থেকেই আলোর পথ শুরু হয়। মো. আরিফুল ইসলাম আরিফের এই সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয় - এটি জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মপ্রকাশ, পরিশ্রমের জ্যোতি এবং এক নতুন যুগের সূচনা। প্রতিটি প্রথম পদক্ষেপই ভবিষ্যতের দিকনির্দেশক- আরিফুল সেই আলোকবর্তিকা, যিনি প্রমাণ করেছেন, নবপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানও স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে যদি তাতে থাকে বিশ্বাস, অধ্যবসায় ও আদর্শের দীপ্তি।’

Link copied!