নওগাঁ-২ আসনে নির্বাচনী প্রচারে এগিয়ে জামায়াত

নাজমুল হক , নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নওগাঁ-২ আসনে নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। মাঠপর্যায়ের জরিপে দেখা যাচ্ছে, এ আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপির থেকে জামায়াত অনেকটাই এগিয়ে।

স্থানীয় সুধীসমাজ ও সাধারণ ভোটাররা বলছেন, এই আসনটি বিএনপির ঘাঁটি নামে পরিচিত ছিল। তারা ভেবেছিলেন, এবার বিএনপি এখানে পরিবর্তন আনবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল অন্যকিছু। বর্তমান মাঠ জরিপে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটার জামায়াতের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করা হচ্ছে।

ভোটাররা জানান, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময়ে নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ ছিল না যা সেসময়ের এমপি থাকা অবস্থায় করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি রাজপথে আন্দোলন বন্ধ করে পরিবার নিয়ে ঢাকায় ছিলেন দীর্ঘ ১৭ বছর। আওয়ামী সরকারের পতনের পর শামসুজ্জোহা খান ও স্ত্রী সামিনা পারভিন পলি চাঁদাবাজি, জমি দখল, পুকুর দখল ও আওয়ামী লীগের নেতাদের শেল্টার দেওয়ার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমান বিএনপির তৃণমূল পর্যায় থেকে জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগে জামায়াত স্থানীয়ভাবে বেশ শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। আসন্ন নির্বাচনে যার সুফল ঘরে তুলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে থাকতে যে পরিমাণ দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রয়োজন, তা যথাযথভাবে দেখাতে না পারলে আসন হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা। ইতিমধ্যে কেন্দ্র ঘোষিত প্রাথমিক মনোনয়নে শামসুদ্দোহা খানের নাম আসায় জামায়াত-শিবির বেশ উজ্জীবিত।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপিকে ঘায়েল করতে নিজেদের শক্তিশালী প্রচারণার কৌশল কাজে লাগাচ্ছে জামায়াত। তারা বিএনপির প্রার্থী ও নানান দুর্বলতা এলাকার মানুষের কাছে তুলে ধরছে। যার ফলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, নারী ও তরুণরা এসব প্রার্থী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর সাথে বিরোধী শিবিরের প্রচারণা যোগ হলে পাল্লা অন্য দিকে হেলবেই বলে জানাচ্ছেন তৃণমূলে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত ও নিপীড়িত অবস্থায় থাকা বিএনপির কর্মীরা।

অন্যদিকে সচেতন মহল, ত্যাগী, কারানির্যাতিত ও সাধারণ ভোটাররা বলছেন, গত ১৭ বছর জোহা সাহেব যখন আওয়ামী লীগের শেল্টারে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন, তখন দলের হাল ধরেছিলেন মেধাবী তরুণ রাজনীতিবিদ, সৎ, যোগ্য ও উচ্চ বংশীয় ছেলে আলহাজ্ব খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী। দুঃসময়ে দলের হাল ধরতে গিয়ে তিনি একাধিকবার জেলেও গিয়েছিলেন। ভোটাররা ভেবেছিলেন দল এবার তাকেই মনোনয়ন দেবে। সেজন্য তারা দলমত নির্বিশেষে শিক্ষিত, মার্জিত, ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় প্রার্থী নাজিবুল্লাহ চৌধুরীর সাথে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তবে দলের এমন ভুল সিদ্ধান্তে এই আসনটি নিঃসন্দেহে বিএনপির হাতছাড়া হবে বলে মনে করছেন তারা।

Advertisement

Link copied!