ইউক্রেনে আবারও বড় আকারে বিমান হামলা শুরু রাশিয়ার

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:১৩ পিএম

ইউক্রেনে আবারও বড় আকারে বিমান হামলা শুরু রাশিয়া। এতে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর ও অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার চালানো সবচেয়ে বড় বিমান হামলাগুলোর একটি এটি।

কোনেও অগ্রগতি ছাড়াই শনিবার শেষ হয় ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যকার তিন দিনের আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে তার ফোনালাপ ছিল ‘গঠনমূলক’। যদিও দুপক্ষই স্বীকার করেছে, কোনও ধরনের গঠনমূলক অগ্রগতির বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে মস্কো সত্যিকারের শান্তির পথে এগোতে রাজি কি না, তার ওপর।

আলোচনার ক্ষেত্রে এ অচলাবস্থা আবারও দেখিয়ে দিয়েছে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আর যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে বিস্তর ব্যবধান আছে। কারণ, পূর্ব ইউক্রেনে রুশ বাহিনী টানা অগ্রসর হচ্ছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবার রাতে শুরু হওয়া হামলায় রাশিয়া মোট ৬৫৩টি ড্রোন ও ৫১টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ইউক্রেনের বিভিন্ন প্রান্তে জ্বালানি স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো হামলার নিশানা করা হয়েছে।

এসব হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। হামলায় ২৯টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহর ক্লিমেনকো নিশ্চিত করেছেন। হামলায় সাময়িকভাবে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে পারমাণবিক চুল্লিগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) বলেছে, মস্কোর অভিযানের শুরু থেকেই রুশ দখলে থাকা এ স্থাপনায় ছয়টি বন্ধ চুল্লিকে ঠান্ডা রাখতে এবং ভয়াবহ বিপর্যয় ঠেকাতে অবিরাম বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।

জেলেনস্কি বলেন, “জ্বালানি স্থাপনাগুলোই ছিল (হামলার) প্রধান নিশানা।”

তিনি আরও বলেন, ড্রোন হামলায় রাজধানী কিয়েভের কাছে ফাস্তিভ শহরের একটি রেলস্টেশন ধ্বংস হয়েছে। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর তথ্যমতে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ৫৮৫টি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রের সাম্প্রতিক বাস্তবতা এখন রাশিয়ার অনুকূলে। এ অবস্থায় জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে।

ডোনেটস্কের পোকরোভস্ক শহরের খুব কাছে পৌঁছে গেছে রুশ বাহিনী। পাশের শহর মিরনোহরাদকেও প্রায় চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে তারা।

শুধু নভেম্বর মাসেই রুশ সেনারা প্রায় ৫০৫ বর্গকিলোমিটার (১৯৫ বর্গমাইল) এলাকা দখল করেছেন, যা অক্টোবর মাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

রাশিয়া এখন কার্যত পুরো লুহানস্ক অঞ্চলই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। খেরসন পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীয় এলাকার বড় অংশও তাদের দখলে। এসব এলাকার যুদ্ধক্ষেত্রে মোটামুটি স্থিতিশীল অবস্থা থাকলেও রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে।

Link copied!