শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ। দৃষ্টিশক্তি না থাকলে সারা জীবনটাই হয়ে যাবে অন্ধকার। বর্তমান সময়ে বয়স বাড়তে না বাড়তেই চোখের দৃষ্টি কমে যায়। তাছাড়া দিন দিন বাড়ছে মোবাইল, ল্যাপটপের ব্যবহার। কাজের চাপের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চোখের চাপ। দিনে আট থেকে নয় ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে কাজ করতে হচ্ছে অনেককেই। সঙ্গে বাড়ি ফিরে টিভি দেখা। সারাদিন নেটমাধ্যমে ঘোরাঘুরি তো আছেই। এত কিছুর মধ্যে কীভাবে ভালো থাকবে চোখ?
পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে চোখের ক্ষতি হয়। তাই উপযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো চোখের যত্ন নেয়াটাও খুব জরুরি। প্রোটিন, ভিটামিন, ক্যালশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার খেলে তবেই সুস্থ থাকবে চোখ। তাই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খাওয়া যেতে পারে আরও কয়েক ধরনের খাবার—
সামুদ্রিক মাছ
চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের জুড়ি মেলা ভার। শরীরের প্রয়োজনীয় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মেলে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ থেকে। সার্ডিন, স্যামন কিংবা টুনা মাছ এই ধরনের মাছের তেল চোখের জন্য খুবই উপকারী।
গাজর
চোখের যত্নে অত্যন্ত কার্যকর গাজর। গাজরের বিটা-ক্যারোটিন বা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই জরুরি। নিয়মিত গাজর খেলে চোখে সংক্রমণের আশঙ্কাও কমে। ভিটামিন এ চোখের মণির যত্ন নেয়।
ডিম
ভিটামিন এ পাওয়া যায় ডিমেও। পাশাপাশি, ডিমে পাওয়া যায় জিঙ্ক ও লুটিন। জিঙ্ক চোখের সাদা অংশ ভাল রাখাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ডিমের কুসুম রোজ খেলে ভাল থাকে চোখ।
ভিটামিন সি
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য দরকার ভিটামিন সি-ও। আর ভিটামিন সি-র সবচেয়ে ভাল উৎস লেবু। নিয়মিত মুসাম্বি কিংবা লেবু খেলে সেই প্রয়োজন মিটতে পারে।
দুধ
দুধ কিংবা দুগ্ধজাত যে কোনও খাবারই চোখের যত্নে কাজে লাগে। দুধ এবং দইয়েও রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং জিঙ্ক। দু’টি উপাদানই চোখের যত্নে জরুরি। যারা গরুর দুধ খেতে পারেন না, তারা কাঠবাদাম থেকে পাওয়া দুধও খেতে পারেন। তাতেও ভাল থাকে চোখ।
মুরগির মাংস
মুরগির মাংসে রয়েছে প্রচুর জিঙ্ক এবং ভিটামিন ‘বি’। যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মুরগির মাংস নানাভাবে খাওয়া যেতে পারে।
টমেটো
চোখের যত্নে যা খাবেন টমেটো খেলে অনেক লাভ। এক গবেষণায় দেখা গেছে টমেটোতে থাকা লাইকোপিন চোখের রেটিনাকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষা দেয়।
পালংশাক
পালংশাকে রয়েছে প্রচুর রঞ্জক পদার্থ, বেটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে এবং ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। তাই প্রতি সপ্তাহেই রান্না করে বা সালাদের সঙ্গে পালংশাক খাওয়া উচিৎ।
কচু শাক
চোখের জ্যোতির জন্য কচু শাকের উপকারিতা অনন্য। কচু একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিকর সবজি। ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, লৌহ, ক্যালসিয়াম উপাদান রয়েছে কচুতে।
ভুট্টা
লুটেইন এবং জেক্সানথিনের অন্যতম উৎস হলো ভুট্টা, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ চোখ সুরক্ষায়। এই উপাদানসমূহ চোখের আয়ু ধরে রাখতে পারদর্শী। ভুট্টা সালাদ হিসেবে, রান্না করে বা কাচা ও খাওয়া যেতে পারে। দিনে কম করে ৫ গ্রাম ভুট্টা খেলে চোখের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়। এমনকি ছানি পড়ার ঝুঁকি কমে যায়।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রচুর শাক-সবজি রাখুন। সবুজ শাক-সবজি চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও প্রতিদিন টাটকা ফল খান। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। সকালে সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকালে চোখ ভালো থাকে। চোখ সুস্থ রাখতে বয়সকাল পর্যন্ত আমাদের এই অভ্যাস জারি রাখা প্রয়োজন।