শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জামালপুরের কৃতিসন্তান, আধুনিক জামালপুরের রূপকার, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি ১৯৬২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার শুকনগরী গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে মির্জা আবুল কাশেম এবং মোছা. নূরুন্নাহার বেগম দম্পতির কোল আলো করে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সালে তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় বালিজুড়ী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। তিনি ১৯৭৮ সালে জামালপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচএসসি এবং ১৯৮৩ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ১৯৭৭ সালে হাইস্কুল জীবনেই ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদস্যপদ লাভ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৯ সালে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্র সংসদের অ্যামিউজমেন্ট এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট সেক্রেটারি ও ১৯৮১ সালে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। মির্জা আজম ১৯৮৭ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক হন। ১৯৯১ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি এবং জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর জামালপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। উক্ত সময়কালীন তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ধারাবাহিক ভাবে পর পর পাঁচবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৮ম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ এবং ৯ম জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৯১, জুন ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জামালপুর-৩ (সংসদীয় আসন নং: ১৪০) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ এবং ২০০৮ সালে তার নিজ দল সরকার গঠন করার পর সরকারদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ৫ম সংসদে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির, ৭ম সংসদে সরকারি প্রতিশ্র“তি সংক্রান্ত কমিটির এবং বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির এবং ৯ম সংসদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
ক্লিন ইমেজ ও অত্যন্ত পরিশ্রমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সভানেত্রী ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-নজরে আসেন। ১২ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ গ্রহণ করেন। ১৩ জানুয়ারি, ২০১৪ তারিখে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। শিক্ষানুরাগী আত্মবিশ্বাসী উদ্যোমী চিরতরুন একজন মির্জা আজম এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। তন্মধ্যে জামালপুর জেলাধীন শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ, বঙ্গবন্ধু কলেজ, শেখ কামাল কলেজ, খাজা শাহ সুফি ইউনুছ আলী ডিগ্রী কলেজ, আলেয়া আজম কলেজ, মির্জা আজম ডিগ্রী কলেজ, আব্দুল জলিল কারিগরী কলেজ, আব্দুল হাই বাচ্চু মহিলা কারিগরী কলেজ অন্যতম। বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম তাঁর নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকায় যথাযথ ও সুষম উন্নয়নের জন্য খুবই উদগ্রীব থাকেন। তিনি শিক্ষা, সামাজিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে স্ব-উদ্যোগে সহায়তা দিয়ে দেশের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে ৬৪টি জেলার মধ্যে ১০টি উন্নত জেলার তালিকায় জামালপুর জেলাকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে জামালপুর জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী, শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বেশ কয়েকটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দুটি ইপিজেড, তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, কামালপুর স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন,অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন এই ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউটটি স্থাপিত হতে যাচ্ছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের শীহাটা গ্রামে জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়কের পাশে ৮ একর জায়গাজুড়ে। তিনটি বাইপাস সড়ক নির্মাণসহ সারা জেলায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কোনো কোনো প্রকল্প কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিমাসেই যুক্ত হচ্ছে আরও নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প।