সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন
একদিন সাহাবিদের নিয়ে বসেছিলেন রাসূল (সা.)। এমন সময় এক ব্যক্তি তাদের সামনে হাজির হন। সাহাবিদের কেউ তাকে চিনতে পারেননি। ওই ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর কাছে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে চলে যান। তিনি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর সাহাবিরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি আর কেউ নন, তিনি হজরত জিবরাইল (আ.)।
উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের সামনে এলেন। লোকটির পোশাক-পরিচ্ছদ ছিল খুবই ধবধবে সাদা, তার চুলগুলো ছিল গাঢ় কালো এবং তার ওপর সফরের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। আর আমাদের কেউ তাকে চিনতেও পারছিল না। সে সোজা রাসূল (সা.)-এর কাছে গিয়ে বসল। তারপর তার হাঁটু রাসূল (সা.)-এর হাঁটুর সঙ্গে লাগিয়ে দিয়ে নিজের হাত দুখানা তার ঊরুর ওপর রেখে বলল, হে মুহাম্মদ! ইসলামের পরিচয় আমাকে বলে দিন। রাসূল (সা.) বলেন, ইসলাম এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল। আর তুমি নামাজ কায়েক করবে, যাকাত দেবে, রমজানের রোজা রাখবে এবং সামর্থ্য থাকলে হজ করবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। আমরা তার এমন আচরণে বিস্ময় বোধ করলাম যে, সে তাকে জিজ্ঞেসও করছে আবার তার কথা সত্য বলে মন্তব্য করছে।
সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ঈমানের পরিচয় বলে দিন। তিনি বলেন, ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলদের, কিয়ামতের দিন এবং তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ইমান রাখবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন।
সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তা এই যে, তুমি আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করবে যেন তুমি তাকে দেখছ। যদি তুমি তাকে না দেখ, তবে নিশ্চয় তিনি তোমাকে দেখছে।
সে বলল, কিয়ামতের বিষয়ে আমাকে বলুন। তিনি বলেন, যাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো সে প্রশ্নকারী থেকে বেশি কিছু জানে না। সে বলল, তাহলে তার আলামতগুলো অবহিত করুন। তিনি বলেন, দাসী তার কর্তাকে প্রসব করবে। আর (এক কালে) খালি পা ও উলঙ্গ শরীরবিশিষ্ট গরিব মেষের রাখালরা (পরবর্তীকালে) সুউচ্চ দালান-কোঠা নিয়ে পরস্পর গর্ব করতে দেখবে। তারপর লোকটি চলে গেল।
বেশ কিছুক্ষণ পর রাসূল (সা.) বলেন, হে উমার! তুমি কি জান প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তিনি হচ্ছেন জিবরাইল। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন। (মুসলিম)