প্রায় সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, যে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশের ওপর- তা নেমে এসেছে সিঙ্গেল ডিজিটে। আগামী জুন-জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশার বাণী শুনিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। রপ্তানি আয় বেড়েছে, শ্রমিক অসন্তোষও সহনীয় মাত্রায় এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে একমাত্র উদ্বেগ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এমন পরিস্থিতিতে মাগুরায় এক শিশু নিপীড়নের ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে।
এমন প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা অনেক ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান হচ্ছে।
গত ফেব্রুয়ারির শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মধ্যরাতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নিজেও পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, তিনি কাজ করছেন। কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। পদত্যাগের বিষয় আসবে কেন।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম থেকেই দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা মব হামলা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়, তা সামলানো যায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের সায় থাকার অভিযোগও রয়েছে। ডাকাতি, চাঁদাবাজি, খুনের ঘটনায়ও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি।
এদিকে সরকারেরই একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে আগে একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে সরাতে হয়েছে। এখন ব্যর্থতার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে সরানো হলে এর কোনো নেতিবাচক দিক থাকে কি না, এ বিষয়টিও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বিবেচনায় থাকতে পারে।
অবশ্য সরকারের কোনো সূত্র বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় নিচ্ছে সরকার। তবে উপদেষ্টাকে না সরিয়ে সরকার আরও কঠোর হওয়ার চিন্তা করছে।
তবে পুলিশের সাবেক আইজি নুরুল হুদা মনে করেন, সরকারের পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ফলে তা কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে, এ নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাশেম মো. ফজলুল হক বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপে পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হবে- তা বলা মুশকিল।
এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যদি ঢেলে সাজাতে চায়, তা বিবেচনা করা যেতে পারে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেনবলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সরালে সমাধান হবে না। সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হইতেছে; আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইসলামপন্থী দলগুলোও একইরকম বক্তব্য দিচ্ছে। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। সেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সরিয়ে কোনো সমাধান আসবে না।
জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপিসহ অন্য দলগুলোও পরিস্থিতির পেছনের ‘ষড়যন্ত্র’ তত্ত্বের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।
এদিকে গত ফেব্রুয়ারির শেষে তিনি মধ্যরাতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নিজেও পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, তিনি কাজ করছেন। কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। পদত্যাগের বিষয় আসবে কেন।
আপনার মতামত লিখুন :