ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে - এমন অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়েছে শাখা ছাত্রদল। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবনে ল অ্যান্ড ল্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ভবনের নীচে অবস্থান নেয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ছাত্রলীগের দোসর কাওকে নিয়োগ না দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহকে স্মারকলিপি দেয় তারা।
স্মারকলিপিতে তারা বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, গত ০৯ অক্টোবর ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (লিখিত ও ভাইভা) হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট মুক্ত শিক্ষক নিয়োগ হবে। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী- ছাত্রলীগের দোসর রাকিবুল ইসলাম রাকিব নামে এক প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, যিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যেটা আমাদের জুলাই চেতনাকে আঘাত করে এবং জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানীর শামিল।
আজ (১০ অক্টোবর) 'ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট' বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (লিখিত ও ভাইভা) অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কোনোভাবে জুলাই চেতনাকে বাধাগ্রস্থ করতে চাই না। আমরা আশা করি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে একটি ফ্যাসিস্টমুক্ত শিক্ষক নিয়োগ উপহার দেবেন।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ছাত্রলীগের রাকিব নামের একটা ছেলে অংশগ্রহণ করেছে। সে চিহ্নিত ছাত্রলীগ, সে ছাত্রলীগের অর্থ যোগানদাতা ও অস্ত্র সরবরাহকারী ছিলো। হয়তো শিগগিরই ছাত্রলীগ পুনর্বাসন হবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তার নিয়োগ কনফার্ম করবে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগ আছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি, প্রশাসনকে লিখিত দেওয়ার পরেও প্রশাসন পরীক্ষা নিবে৷ আমরা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছি যে আমরা আপনাদের সাথে নাই আপনারা আপনাদের মতো চলবেন, আমরা আমাদের মতো চলব।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করে ফ্যাসিজম কায়েম করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দাবি জানিয়েছি কোন ধরনের ছাত্রলীগ যেন এখানে অংশগ্রহণ করতে না পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কোন রকম তদারকি বা খোঁজখবর ছাড়াই তাদের নিয়োগ বোর্ডের কার্ড দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট চেয়ারম্যানরাও এর সাথে জড়িত, তারা নিয়োগ বোর্ডের সদস্য। তাহলে নিয়োগ প্রক্রিয়া কোন পদ্ধতি চলছে তা বুঝতে বাকি থাকে না। ছাত্রদলের কাছে মনে হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজই হচ্ছে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন করা।
পরবর্তীতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এবারের শিক্ষক নিয়োগে অতীতের যত বদনাম ছিল, মেধার ভিত্তিতে হয় নাই বা যোগ্যতা নেই; আমি বিশ্বাস করি এ ধরনের সকল বদনাম এবারে ঘুচাবে। শিক্ষক নিয়োগে ফ্যাসিস্ট সম্পৃক্ততার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছাত্র হিসেবে যারা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছে তারাই এখানে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। এখানে কে কোন সংগঠন, দল করেছে সেটা পরবর্তী বিষয়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ সকলেই করতে পারবে।
আপনার মতামত লিখুন :