দেবিদ্বারে ছোট বোনকে জিন ছাড়াতে গিয়ে ধর্ষনের শিকার বড়বোন

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া

তোফায়েল আহমেদ, দেবিদ্বার: কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদের জিলানীর ছেলে কুদ্দুস মিয়া নামে এক কবিরাজের কাছে ছোট বোনকে জিন ছাড়াতে গিয়ে ধর্ষনের শিকার হয়েছে শারমিন আক্তার মিম(১৯) নামের এক গৃহবধূ। এই ঘটনায় ভিক্টিমের মা জোসনা বেগম সোমবার(২০-১০-২৫)  বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন৷ 

লিখিত ঐ এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ৩০-০৬-২০২৫ তারিখ সকালে ছোট বোন নাসরিন আক্তারকে জিন ছাড়াতে কবিরাজ কুদ্দুস মিয়ার বাড়ীতে গেলে কুদ্দুস কবিরাজ বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তার বসত ঘরের একটি গোপন কক্ষে নিয়ে যায় ভিক্টিমকে। পরে ঐখানে জোর জবরদস্তি করে ভিক্টিমকে ধর্ষন করে ভিডিও ধারন করে৷ এরপর ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ভিক্টিমের কাছে প্রায় এক লক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় কবিরাজ কুদ্দুস মিয়া। দীর্ঘদিন যাবত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দিয়ে একাধিক বার শারিরিক সম্পর্ক করে ঐ কবিরাজ৷ এক পর্যায়ে ভিক্টিমের কাছে আরো মোটা অংকের টাকা দাবী করে এতে অস্বীকৃতি জানালে ভিক্টিমের শশুর বাড়ী ও স্বামী সহ বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের কাছে ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ 

ভিক্টিম শারমিন আক্তার মিম সাংবাদিকদের বলেন, আমি আমার ছোট বোনকে জিন ছাড়াতে নিয়ে যাই কবিরাজ কুদ্দুসের কাছে। সে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগে ৩০০ টাকা দামের নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে আমার স্বাক্ষর নেয়৷ দু'একদিন যাওয়ার পর এক পর্যায়ে সে আমাকে তার বসতঘরের একটি গোপন কক্ষে নিয়ে যায়, এরপর জোর করে ধর্ষন করে ভিডিও ধারণ করে রাখে। একপর্যায়ে সেই মুহূর্তে ভিডিও আমার ইমুতে দেয় এবং মোটা অংকের টাকা দাবি করে। আমি বিভিন্ন স্থান থেকে তাকে টাকা এনে দিলেও সে আমার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে আমার ভাইকে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তিন লক্ষ টাকা নেয় সে৷ আমি ওই টাকা ফেরত চাইলে ভিডিওর হুমকি দিয়ে আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমার স্বামীর বাড়ির লোকদের কাছে ভিডিও ছবি ছড়িয়ে দেয়। এবং এ বিষয়ে কোথাও আইনি ব্যবস্থা নিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

ভিক্টিমের মা জোসনা বেগম বলেন, ভন্ড কবিরাজের ফাঁদে পড়ে আমার তিনটি পরিবার ভেঙে গেছে। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে তার সর্বোচ্চ বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্দিস মিয়া জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। দুই পক্ষকে নিয়ে সামাজিক শালিস বসার আহব্বান করেছি কিন্তু মেয়ের পক্ষ আসেনি৷ 

এদিকে ঘটনার বিষয় জানতে কবিরাজ কুদ্দুস মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন জানান, ভিক্টিমের মায়ের লিখিত এজাহার পেয়েছি৷  বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে, তদন্ত সাপেক্ষে ঐ কবিরাজের বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Link copied!