জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বেগম খালেদা জিয়া: চন্দ্রগঞ্জে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন

আরিফুর রহমান, লক্ষ্মীপুর সদর: রাজনীতির অঙ্গনে এক অনমনীয় ও দৃঢ়চেতা নাম—বেগম খালেদা জিয়া। দেশের কঠিন মুহূর্তগুলোতে তিনি যে সাহস, ধৈর্য ও অটল বিশ্বাস নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা বহু মানুষের কাছে আজও অনুপ্রেরণা। অথচ আজ সেই মানুষটিই দাঁড়িয়ে আছেন জীবন-মৃত্যুর সীমানায়। তাই দেশের প্রতিটি ঘরে, প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জমেছে গভীর উদ্বেগ আর নীরব প্রার্থনার ঢেউ।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ গণমিলনায়তনের আলো-আঁধারের পরিবেশে ধীরে ধীরে জড়ো হন শত শত নেতা-কর্মী। কারও মুখে ব্যথার ছাপ, কারও চোখে অস্থিরতা-তবু সবার কণ্ঠে একই আকুতি- 

'খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন।' 

মিলাদ শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন রেদোয়ান হুজুর। তাঁর কণ্ঠে ছিল অদৃশ্য এক কম্পন, গভীর আবেগের ভার। তিনি আর্তকণ্ঠে বলেন- 

“হে আল্লাহ, তিনি বহু মানুষের আশ্রয়, প্রেরণা আর ভরসার ঠিকানা। তাঁর কষ্ট দূর করে দাও, তাঁর শরীরে আরোগ্য দান করো। এই জাতিকে আবার সঠিক পথে চলার শক্তি দাও-যেন তাঁর হাত ধরেই এই পথচলা ফিরে আসে আলোয়।”

মোনাজাতের সেই শব্দগুলো মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে পুরো মিলনায়তনে। চারদিকে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। বৃদ্ধ থেকে তরুণ-সবাই হাত তোলেন প্রার্থনায়। কারও চোখে বহু বছরের রাজনৈতিক বেদনার ছাপ, কারও চোখে শ্রদ্ধার দীপ্তি, আর কারও চোখে প্রিয় মানুষকে হারানোর অদৃশ্য ভয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। কেউ নীরবে চোখের পানি মুছছিলেন, কেউ নিচু স্বরে দোয়া পড়ছিলেন। কোনো স্লোগান নেই, কোনো রাজনৈতিক গর্জন নেই-ছিল শুধু এক নেত্রীর প্রতি নিখাদ ভালোবাসা, মমতা আর মানবিক উদ্বেগের মৃদু প্রতিধ্বনি।