বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যকে তুলে ধরে নতুন নকশার ৫০০ টাকার নোট বাজারে আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৪ সালের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দিয়ে সব মূল্যমানের নোট নতুনভাবে ছাপানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তার ধারাবাহিকতাতেই বৃহস্পতিবার থেকে বাজারে আসছে নতুন এই নোট।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নোটটি প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু করা হবে, পরে ধাপে ধাপে অন্যান্য শাখায় পাওয়া যাবে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত নোটটির দৈর্ঘ্য ১৫২ মিলিমিটার ও প্রস্থ ৬৫ মিলিমিটার।
নোটের সামনের বাম পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, আর মাঝখানে জলছাপে ফুটে উঠেছে পাতা ও কলিসহ জাতীয় ফুল শাপলা। পেছনের অংশে যুক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি।
নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যেও এসেছে পরিবর্তন। জলছাপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মুখ, যার নিচে ইলেকট্রো টাইপে দেখা যাবে ‘৫০০’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম। নোটের সামগ্রিক নকশায় সবুজ রঙের আধিক্য রাখা হয়েছে।
নোটটিতে নিরাপত্তার জন্য সংযোজন করা হয়েছে ১০টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য—এর মধ্যে রঙ পরিবর্তনশীল কালি রয়েছে, যা নোট নড়ালে ডান পাশের ‘৫০০’ লেখাটিকে সবুজ থেকে নীল রঙে পরিবর্তন করে। লাল–সোনালি রঙের পেঁচানো নিরাপত্তা সুতায় আলো ফেললে ‘৫০০ টাকা’ লেখা স্পষ্ট দেখা যায়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য নোটের নিচে ডান দিকে পাঁচটি উঁচু বৃত্ত রাখা হয়েছে। শহীদ মিনারসহ কিছু অংশ ইন্টাগ্লিও প্রিন্টে হওয়ায় স্পর্শে উঁচু অনুভূত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ‘বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ শিরোনামের নতুন সিরিজের অংশ হিসেবে এ নোট বাজারে আসছে। এর আগে একই সিরিজে ১০০০, ১০০, ৫০ ও ২০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়েছে।
নতুন নোট চালুর পরও প্রচলিত সব পুরনো নোট ও কয়েন আগের মতোই বৈধ থাকবে। পাশাপাশি মুদ্রা সংগ্রাহকদের জন্য বিশেষ অবিনিময়যোগ্য নমুনা নোট মুদ্রণ করা হয়েছে, যা নির্ধারিত মূল্যে মিরপুরের টাকা জাদুঘর থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :