দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে উন্নতির নতুন দিগন্ত খুলে দিতে নেপালের কাঠমান্ডুতে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে প্রথম সাফ নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ। ললিতপুরের সাওদোবাটোতে অবস্থিত এএনএফএ কমপ্লেক্সে টুর্নামেন্ট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের করাচি সিটি এফসির অধিনায়ক মারিয়া খান ও প্রধান কোচ আদিল রিজকি জানান, 'নেপালের নারী ফুটবলের উন্মাদনা সরাসরি দেখতে পেরে আমরা অত্যন্ত উৎসাহিত।'
দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক ক্লাব টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বপ্ন দেখছিলেন সাফ সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। এবার তার সেই স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে সাফ মহাসচিব পুরুষোত্তম ক্যাটেল জানান, 'এটি এশিয়ার পাঁচ অঞ্চলের মধ্যে প্রথম নারী ক্লাব টুর্নামেন্ট। এখনই শুরু করার সময় ছিল সবচেয়ে উপযুক্ত।' তিনি আরও জানান, দক্ষিণ এশিয়ার নারী দলগুলোর সাম্প্রতিক অগ্রগতি বিশেষ করে বাংলাদেশের ২০২৬ এএফসি নারী এশিয়ান কাপে ঐতিহাসিক যোগ্যতা অর্জন নারী ফুটবদোর প্রসারে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের উদ্যোগে সার্ক অঞ্চদের সেরা পাঁচ ক্লাব এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে-নেপালের এপিএফ ক্লাব, বাংলাদেশের নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি, ভারতের ইস্ট বেঙ্গল, ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড লেডিজ এবং পাকিস্তানের করাচি সিটি এফসি। প্রতিটি দল রাউন্ড-রবিন লিগে একে অপরের মুখোমুখি হবে। শীর্ষ দুই দল উঠবে ২০ ডিসেম্বরের ফাইনালে। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে।
২০২৪ সালের পাকিস্তান জাতীয় নার ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী করাচি সিটি এফসি এবারের টুর্নামেন্টে বড় আশায় নেপালে এসেছে। কোচ আদিল রিজকির দলে আছেন পাঁচ বিদেশি খেলোয়াড়, যারা গত মৌসুমে ক্লাবটির প্রথম লিগ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানে নারী ফুটবলার কম হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দৃশ্যপট দ্রুত বদলাচ্ছে।' অধিনায়ক মারিয়া খান যোগ করেন, 'আমরা শুধু ক্লাব নয়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি। আমাদের লক্ষ্য জয়।'
গতকাল উদ্বোধনী দিনের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের করাচি সিটি এফসির বিপক্ষে মাঠে নামেছে ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড লেডিজের বিপক্ষে। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দুই দল। গতকালের দিনের অন্য ম্যাচে নেপালের এপিএফ ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশের নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি। তবে জয় নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারেনি নাসরিন স্পোর্টস একাডেমি। হেরেছে ৪-০ গোলে।
এদিকে ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড দলে ৯০ শতাংশ খেলোয়াড়ই জাতীয় দলের সদস্য। কোচ ইয়েশি ওয়াংচুক বলেন, 'সাফ টুর্নামেন্ট আমাদের শক্তি পরিমাপের দুর্দান্ত প্লাটফর্ম।' অধিনায়ক সুনীতা রাই নেপালের ফুটবলভক্তদের 'দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে আবেগী' বলে উল্লেখ করেন। আয়োজকরা জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১০ হাজার ডলার, রানার্সআপ পাবে ৫ হাজার ডলার। সফল আয়োজন ভবিষ্যতে সাতটি সদস্য দেশের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে বলে আশা করছে সাফ।
আপনার মতামত লিখুন :