শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ন

১০৯ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে ৪৩ জন কোটিপতি

১০৯ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে ৪৩ জন কোটিপতি

১০৯ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে ৪৩ জন কোটিপতি

খায়রুল আলম রফিক :
বেতন পান ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এ টাকা দিয়ে রাজধানীতে সংসার চালানোই দায়। অথচ তারা ব্যক্তিগত গাড়িতে অফিসে যান। রাজধানীতে তাদের আছে একাধিক ফ্ল্যাট। আছে বিপুল সম্পত্তি। কিম আশ্চর্যম বলে চোখ কপালে তোলা যেতে পারে, কিন্তু আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নেই তাতে। অনুসন্ধানে শিক্ষা ভবনে অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ১০৯ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে ৪৩ জন কোটিপতি কর্মচারীর সন্ধান মিলেছে। তাদের প্রায় সবাই ১২ বছরের বেশি সময় ধরে মাউশি অধিদপ্তরে কর্মরত। জানা গেছে, মাউশি অধিদপ্তরে একাধিক কর্মচারী-সিন্ডিকেট রয়েছে। কর্মচারীদের বদলি-পদায়নকে ঘিরে সক্রিয় রয়েছে প্রশাসন শাখার একটি সিন্ডিকেট। বেসরকারি মাধ্যমিক ও বেসরকারি কলেজের নাম সংশোধন, পদবি সংশোধন, বিভিন্ন অভিযোগ-নিষ্পত্তি, বকেয়া বেতন পরিশোধ প্রভৃতি কাজের জন্য গড়ে উঠেছে আরও দুটি সিন্ডিকেট।

সিন্ডিকেট-সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা বিভিন্ন কাজের জন্য নিজেরাই অর্থ গ্রহণ করেন ভাগ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও। এসব অনিয়ম করে কর্মচারীরা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ঢাকায় ও নিজ নিজ এলাকায় তাদের আছে জমি, ভবন ও ফ্ল্যাট। তবে তাদের বেশিরভাগ সম্পদ স্ত্রী অথবা শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনের নামে। অনেক কর্মচারীর ব্যক্তিগত গাড়ি আছে। তবে যাদের গাড়ি আছে তারা গণি রোডের অফিস (মাউশি ভবন) পর্যন্ত যান না। তারা হাইকোর্টের আশপাশে গাড়ি রেখে কিছুটা পথ হেঁটে যাতায়াত করেন। বলতে হয়, তাদের ‘চক্ষুলজ্জা’ আছে। মাউশি অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘সব কর্মচারীই যে অনিয়ম করেন তা কিন্তু নয়। কিছু ‘স্পেসিফিক’ লোক থাকতে পারে, যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের প্রতি আলাদা নজর রাখতে হবে। সন্দেহ হলেই তাদের সরিয়ে দিতে হবে। আমার সময়ে আমি কর্মচারীদের বরখাস্ত পর্যন্ত করেছি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি মাউশি অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মচারীকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। কয়েকজনের শাখা পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু শাখা-পরিবর্তন সমাধান নয়। তারা মাউশি অধিদপ্তরের যে শাখায়ই থাকুন না কেন অনিয়মন্ডদুর্নীতির সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকঠাক মতো।

অধিদপ্তরের পরিচালকের (কলেজ ও প্রশাসন) ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) প্রায় ৬ বছর ধরে স্বপদে রয়েছেন। আগে তিনি মহাপরিচালকের পিএ ছিলেন। মোট ১২ বছর তিনি মাউশিতে আছেন। পদে ‘উচ্চমান সহকারী’ হলেও মাউশি অধিদপ্তরের প্রথম ও দ্বিতীয় কর্তাব্যক্তির পিএ হিসেবে ১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন টিকাটুলির কামরুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে। ঢাকায় তার দুটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। ১২/৩/এ হুমায়ুন রোডের ফ্ল্যাটটি স্ত্রীর বড় বোনের নামে কেনা। ৪১৫/বি চৌধুরীপাড়া, খিলগাঁওয়ে রয়েছে আরেকটি ফ্ল্যাট। নির্মাণাধীন ওই ফ্ল্যাটের অন্য মালিকরা তাকে ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে জানে। ব্যক্তিগত গাড়ি আছে তার।

সারা দেশের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সরকারি স্কুল-কলেজের কর্মচারীদের বদলি হয় অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখা থেকে। ফলে এ শাখার পিএ-দের ক্ষমতা অনেক কর্মকর্তার চেয়েও বেশি। এ শাখার সহকারী পরিচালকের পিএ হিসেবে কর্মরত আছেন মো. আছিকুর রহমান। স্কুল-কলেজের কর্মচারী বদলি-পদায়ন সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা তিনি। রাজধানীর বসিলায় তার ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ চলছে। জামালপুরে অনেক জমি রয়েছে। তবে তিনি কিছুদিনের জন্য জামালপুরের একটি কলেজে বদলি হয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আছিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে রাজধানীর একটি কলেজে সম্প্রতি বদলি হয়ে এসেছেন একজন উচ্চমান সহকারী। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন বিভাগের সহকারী পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীকে (পিএ) এ জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছেন। ওই পিএ গত তিন-চার মাসে বদলি-পদায়নের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালকের পিএ আহসানুল হাবীব ছিলেন অনিয়মন্ডদুর্নীতিতে ওস্তাদ। টাকা দিলে শিক্ষা ভবনের যেকোনো কাজ করে দিতেন তিনি। সম্প্রতি কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন তিনি। তারও একাধিক জায়গা-জমি রয়েছে। মহাপরিচালকের একজন পিএ’র বাড়ি অন্য জায়গায় হলেও শ্বশুরবাড়ি রাজশাহীতে তিনি বিপুল সম্পত্তি করেছেন। রাজশাহীতে তার একটি সাততলা ভবন আছে। তাতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে তার। ওই এলাকায় শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনদের নামে বিঘার পর বিঘা ফসলের জমি কিনেছেন তিনি। সরকারি অডিট শাখার উচ্চমান সহকারী মো. নজমুল হোসেন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে যাতায়াত করেন। তবে শিক্ষা ভবনে তিনি গাড়ি ঢোকান না। অদূরে হাইকোর্টের সামনে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে অফিসে আসা-যাওয়া করেন। তার বিরুদ্ধে অনিয়মন্ডদুর্নীতির অভিযোগ জমা আছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক)।

জানা যায়, ডিগ্রি পর্যায়ের ৮৩১ জন ‘তৃতীয়’ শিক্ষককে এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষা ভবনে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। শিক্ষকপ্রতি নেওয়া হয়েছে কমপক্ষে ২ লাখ টাকা। এ লেনদেনের অন্যতম মাধ্যম মো. নজমুল হোসেন। এছাড়া শেরপুরের শিক্ষক আব্দুল হালিমের কাছ থেকে একটি বিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা ছাড় করার জন্য তিনি ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন। পরে কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তিনি ওই শিক্ষককে হুমকি দেন। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় জিডিও করেছিলেন আব্দুল হালিম। দুদকের অভিযোগ, তার সম্পদের বিবরণও তাদের কাছে রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বগুড়ায় তার ২০টি সিএনজি অটোরিকশা রয়েছে। বগুড়ার উপশহর এলাকা, জামিলনগর ও জহুরুলনগরে তার একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। এসবের আনুমানিক মূল্য চার কোটি টাকা। নামে-বেনামে ব্যাংক ও পোস্ট অফিসে লাখ লাখ টাকা রয়েছে তার।

নজমুল হোসেন ‘সিন্ডিকেট’-এর অন্যতম হোতা বেসরকারি কলেজ শাখার উচ্চমান সহকারী মো. বেল্লাল হোসেন। সম্প্রতি তাকে অনিয়মের অভিযোগে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। দুদকে তার বিরুদ্ধেও অভিযোগ জমা আছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বেল্লাল হোসেনের নিজের ও স্ত্রীর নামে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর রয়েছে। গ্রামের বাড়ি বরিশালে বহুতল ভবন রয়েছে। কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় ৩ কোটি টাকায় ১০ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি। রাজধানীতেও তার ২ কোটি টাকা মূল্যের পাঁচ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। মাউশির সাবেক মহাপরিচালকের পিএ ছিলেন উচ্চমান সহকারী মাসুদ পারভেজ। তিনি তদবির-বাণিজ্য করতেন। অভিযোগ রয়েছে, মহাপরিচালকের নাম করে স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষদের কাছ থেকে ফোন করে তিনি টাকা নিতেন। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ শাখায় বদলি করে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় তার ফ্ল্যাট রয়েছে এবং তিনি ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করেন।

স্টোরের একজন উচ্চমান সহকারী ২০১০ সাল থেকে একই জায়গায় রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে স্টোরের মালামাল বুঝে পাওয়ার পর তা বদলে ফেলার অভিযোগ রয়েছে। ফলে যারা মালামাল সরবরাহ করেন তাদের সঙ্গে তার দারুণ সখ্য। রাজধানীর বসিলা ও আশুলিয়ায় তার জায়গা রয়েছে। ধামরাইয়ে বাড়ি রয়েছে। সাধারণ প্রশাসন শাখার একজন উচ্চমান সহকারীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের এনডব্লিউডি কলেজে বদলি করা হয়। ছয় মাস যেতে না যেতেই তিনি ফিরে এসেছেন এবং যথারীতি অনিয়ম শুরু করেছেন। তাকে কর্মচারী পদোন্নতি কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সাধারণ প্রশাসন শাখার আরেকজন উচ্চমান সহকারী ১২ বছর ধরে মাউশিতে কর্মরত। কর্মচারীদের বদলি-পদায়নের অন্যতম কারিগর তিনি। তার ডেমরায় রয়েছে সাততলা বাড়ি।

বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার একজন উচ্চমান সহকারী ২০০৮ সাল থেকে মাউশিতে আছেন। টাকার বিনিময়ে বেসরকারি স্কুলের যেকোনো কাজ করে দেন তিনি। খিলগাঁওয়ে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। জামালপুরে তার অনেক সম্পদ রয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমিকের আরেকজন উচ্চমান সহকারীকে সম্প্রতি প্রশিক্ষণ শাখায় বদলি করা হয়েছে। তার মোহাম্মদপুরে ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রশাসন শাখার আরেকজন উচ্চমান সহকারী নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অন্যতম হোতা। কর্মচারী সমিতির নেতা হওয়ায় তার প্রভাব সবখানে। পদের জোরেই তিনি নানা তদবির বাগিয়ে নেন। বসিলায় তার ৩টি ফ্ল্যাট রয়েছে। রাজধানীতে শেয়ারে তার একাধিক জায়গা রয়েছে। গোপালগঞ্জে রয়েছে অনেক জায়গা-জমি।

আইন শাখায় সংযুক্ত একজন হিসাবরক্ষক টাকার বিনিময়ে আইনি মতামত ঘুরিয়ে দিতেন নিমেষে। অনেক টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তাকে সরকারি কলেজ শাখায় বদলি করা হয়েছে। বেসরকারি অডিট শাখায় কর্মরত একজন উচ্চমান সহকারী আগে মাদ্রাসা শাখায় ছিলেন। প্রায় ১৪ বছর মাউশিতে আছেন। জিগাতলায় তার একটি ফ্ল্যাট আছে, আরেকটি ফ্ল্যাট নির্মাণাধীন। বসিলায় নিজের জায়গা রয়েছে। অনিয়মন্ডদুর্নীতির সিন্ডিকেটে রয়েছেন বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও প্রশাসন শাখার একজন উচ্চমান সহকারী। প্রশাসন শাখার আরেকজন উচ্চমান সহকারী কোটা-জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কোটি টাকার মালিক।

মাউশি সূত্র জানায়, প্রশাসন শাখার মো. মনোয়ার হোসেন ১২ বছর, কাবুল হোসেন মোল্যা ৯ বছর, মো. জামাল উদ্দীন ৫ বছর, মো. আব্দুল খালেক ১০ বছর, প্রণয় কুমার বাড়ীয়া ১২ বছর, মো. ফরহাদ হোসেন ১২ বছর ধরে মাউশি অধিদপ্তরে রয়েছেন। স্টোরের মো. ছানোয়ার হোসেন ১২ বছর ও দেবাশীষ চন্দ্র দে ১০ বছর ধরে রয়েছেন। ক্যাশ শাখার মো. আহমেদুজ্জামান ১২ বছর, সরকারি অডিট শাখার মো. নজমুল হোসেন ১০ বছর, বেসরকারি অডিট শাখার মো. নিজামুল কবীর ১০ বছর ধরে রয়েছেন।

বেসরকারি মাধ্যমিকের বিকাশ চন্দ্র মজুমদার আগে শিক্ষা ভবনে আট বছর থাকার পর কিছুদিন অন্য জায়গায় থেকে আবার দেড় বছর ধরে রয়েছেন। বেসরকারি মাধ্যমিকের মো. মোস্তাফিজুর রহমান ১০ বছর, বিভাষ কুমার বোস ৪ বছর, সরকারি কলেজ শাখার মো. আসাদুজ্জামান ১০ বছর, এসিআর শাখার মো. মেহেদি হাসান ১০ বছর, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার মো. মোবারক উল্যাহ মিঠু ১০ বছর, প্রশিক্ষণ শাখার এস এম মাসুদ পারভেজ ১০ বছর, মো. গোলাম রসুল ১০ বছর, মো. বশির হাওলাদার ১০ বছর ধরে মাউশি অধিদপ্তরে রয়েছেন। বিশেষ শিক্ষা শাখার মো. শাহাজাহান ১০ বছর ও আইন শাখার কাজী মহসিন ৮ বছর ধরে রয়েছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |