বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি:
শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা বিবিএস ক্যাবলস লিমিটেড ও নাহী গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদারের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম ও জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করা হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট দুদক চেয়ারম্যান বরাবর জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়, কাগজে কলমে কোম্পানি করে নানা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার। ২০২০ সালে শেয়ারবাজারে কারসাজির কারণে বিবিএস ক্যাবল ও তার পরিচালকদের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। বিবিএস ক্যাবলস লিমিটেড ও নাহী গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম ও জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। বিবিএস ক্যাবলসের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার ব্যাপক জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
তার বিবিএস ক্যাবলসের শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি দেশব্যাপী মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার হয়েছে। তা পরবর্তীতে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নামমাত্র জরিমানা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ খেলাপির তালিকায় রয়েছেন তিনি। তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার আওয়ামী মুখোশ-ধারী হয়ে ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে ব্যাপক অরাজকতা করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নাম ভাঙিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার তার প্রতিষ্ঠান ‘নাহী গ্রুপ’ দিয়ে সারাদেশে নদী রক্ষা বাঁধের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি পানি মন্ত্রণালয়ের ব্যবহৃত জিওব্যাগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিম্নমানের ব্যাগ সাপ্লাই দিয়ে এককভাবে সরকারের হাজার হাজার কোটি হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যাংকের টাকা লুট করে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার বনানীর ১৩ নম্বর রোডে তৈরি করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি।
নিজ এলাকা লালমোহনে রয়েছে তার প্রাসাদ-সম বাড়ি, তার নামে লালমোহন পৌরসভা এলাকায় কোটি টাকা মূল্যের ২০ শতাংশ জমি রয়েছে। যা গরিব-অসহায় মানুষকে ঠকিয়ে নামমাত্র মূল্যে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন। গাজীপুরের শ্রীপুরে নাহী গ্রুপের ফ্যাক্টরির জায়গাটিও অবৈধভাবে দখল করে নেওয়া, বনবিভাগের গাছ কেটে সরকারের জমি রয়েছে এ ফ্যাক্টরির মধ্যে। যা সুষ্ঠু তদন্তে বেরিয়ে আসবে। ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার নিজেকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দাবি করে অবৈধ উপায়ে দেশের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ আমলে প্রায়ই বলতেন, শেখ রেহানাকে ২০ কোটি টাকা দিয়েছি। সে আমাকে ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ করে দিয়েছে। তার সঙ্গে গভীর সখ্যতা রয়েছে। আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নোমানের বিরুদ্ধে নমিনেশন পেতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ৫ কোটি টাকা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। আবেদনে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সৃষ্ট তদন্ত ও নানা অপকর্মের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। নোমান হাওলাদার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনতে দুদক চেয়ারম্যানের মর্জি কামনা করা হয়।