শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

আপডেট
নিম্ন আদালতে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

নিম্ন আদালতে পুলিশের সতর্ক অবস্থান

ঢাকা: আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশর ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ঢাকার নিম্ন আদালতগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সকাল থেকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি পুলিশ।
পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সাদা পোশাকে আদালত প্রাঙ্গনে নজরদারি করতে দেখা গেছে।
সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি আদালতের প্রবেশমুখে সাধারণ মানুষের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছেন পুলিশ সদস্যরা।
ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল আদালত প্রাঙ্গনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া কাউকে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের (প্রসিকিউশন) উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন বলেন, সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে মোতাবেক নিম্ন আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আইনজীবীরা। ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. কামরুজ্জামান শেখ বলেন, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশর ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া ভয়ংকর ব্যাপার। এই ঘটনায় আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান হাওলাদার বলেন, গতকালের ঘটনা আইনজীবী ও আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। তিনটির অধিক মামলা থাকলে বা সন্ত্রাসী হলে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আসামিদের আদালতে আনার নিয়ম। পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ডাণ্ডাবেড়ি দিয়ে আসা উচিত ছিল। আরো অধিক পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া উচিত ছিল। জঙ্গিরা আবার মাথাচারা দিয়ে উঠছে। জননিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আদালত প্রাঙ্গনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা উচিত।
রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে ঢাকার আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সহযোগিরা। পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিরা হলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরের মইনুল হাসান শামীম ও লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার ভেটশ্বর গ্রামের আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা দুইজনই জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। তারা প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় হাজিরা দিতে রোববার তাদের সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছিল। সন্ত্রাস বিরোধের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হাজিরা শেষে হাজতখানায় নেওয়ার সময় চারজনের মধ্যে দুজনকে ছিনিয়ে নেয় সহযোগিরা।
এ ঘটনার পর সারা দেশের অধস্তন আদালতে নিরাপত্তা জোরদারে নির্দেশনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র এবং আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, এই পরিস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |