বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির পর সংঘর্ষ ও আইনজীবী খুনের প্রেক্ষিতে তিনটি মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩৩ জনকেও গ্রেপ্তারের কথা হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন উপস্থাপন করে স্বপ্রণোদিত হয়ে ইসকন নিষিদ্ধ ও তিন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করতে আদেশে চেয়ে আইনজীবী মনির উদ্দিন ২৭ নভেম্বর আবেদন করেন। পরে আদালত এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে অগ্রগতি জানতে চান। সে অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষ আজ সকালে অবহিত করেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় তিনি খুন হন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের অদূরে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। তিনি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে আনা হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এলাকার বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করে তারা। এ সময় ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিক্ষোভকারীরা আইনজীবী সাইফুলকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
তাকে হাসপাতালে নেওয়া দিদার বাংলানিউজকে বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীরা সাইফুল ইসলাম আলিফকে হাতে, মাথা ও পায়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চট্টগ্রামের আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রাস্তায় কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।