সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মামলা কিন্তু সেই অর্থে নিষ্পত্তির সংখ্যা অতি সামান্য। তার ওপরে যে মামলায় একবার জামিন হয় সেও হয় পলাতক। একের পর এক নতুন মামলা আর জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়া আসামিদের ধরতে হিমশিম খায় পুলিশ। ময়মনসিংহে জামিন নিয়ে পলাতক আছে প্রায় ১২ হাজার আসামি। এদের অধিকাংশই জিআর (জেনারেল রেজিস্টার) ও সিআর (কোর্ট রেজিস্টার) মামলার আসামি। সূত্র বলছে, বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট ১২ হাজার ও মাদকের সাজাসহ ১২,২০২ টি। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে তাদের গ্রেপ্তারে জোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে । অবশ্য পুলিশের একটি সূত্রের দাবি— ফেরারি এসব আসামির মধ্যে খুন,চেক, সাজাসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন এবং সমমনা দলের নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
তারা বাসায় অবস্থান না করার কারণে তাদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। ময়মনসিংহে ১৪টি থানার প্রায় সবগুলোতেই অসংখ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে কিন্তু অধিকাংশের বিষয়ই সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই থানা পুলিশের কাছে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ওয়ারেন্ট বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিদিন যে পরিমাণ ওয়ারেন্ট তামিল করা হয়, তার চেয়ে তিনগুণ নতুন ওয়ারেন্ট আসে। এ কারণে ময়মনসিংহ ১৪টি থানায় বিপুল ওয়ারেন্ট পেন্ডিং রয়েছে। এসব ওয়ারেন্ট কীভাবে দ্রুত তামিল করা যায়, সে বিষয়ে পরবর্তী ক্রাইম কনফারেন্স সংশ্লিষ্ট ওসিদের তাগিদ দেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরোয়ানাপ্রাপ্ত কোনো আসামির সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত একবছরে ময়মনসিংহে অন্তত ১০ হাজারের বেশি আসামির হদিস মিলছে না। তাদের মধ্যে জঙ্গি, আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী,শীর্ষ মাদককারবারি, খুনসহ নানা অপরাধের আসামি রয়েছে।
ওইসব আসামির আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেয়ার কথা থাকলেও তারা অনুপস্থিত। যেসব আসামির খোঁজ মিলছে না তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এলাকাভিত্তিক তালিকা করতে থানার ওসিদের নির্দেশ দিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার। এরই মধ্যে তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ করে আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, প্রতিদিনই আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসছেন বিভিন্ন মামলার আসামিরা। জামিন মিললেও তাদের ধার্য তারিখে আদালতে হাজিরা দিতে হয়। কিন্তু আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, যুদ্ধাপরাধী,শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবার ডন থেকে শুরু জঙ্গি কিংবা বড় অঙ্কের প্রতারণার মামলার আসামিরা আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন না বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তাদের হয়ে উকিল বারবার সময় চেয়ে নিচ্ছেন আদালত থেকে। এ কারণে মামলা নিষ্পত্তির হার কমানো সম্ভব হচ্ছে না। গত এক বছরের ব্যবধানে লাপাত্তা প্রায় ১২ হাজার আসামি, কোথায় আছেন তা চিহ্নিত করতে হিমশিম খাচ্ছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। এমনকি অনেক মাদকের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জামিন নিয়ে দেশের বাইরে মানে ভারতে পালিয়ে গেছে। আইনজীবীরা বলেন, ‘জামিন নিয়ে অনেক অপরাধী নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন না, তা সত্য। যেকোনো আসামি জামিন নেয়ার সময় শর্ত দেয়া হয়। কিন্তু প্রায়ই দেখা যাচ্ছে জামিনের পর অনেকেই শর্ত মানে না। পুলিশের কাছে তথ্য আছে— সবচেয়ে বেশি যে পাঁচ থানায় ওয়ারেন্ট ঝুলে আছে :
পর্যন্ত ঝুলে থাকা প্রায় ১২ হাজার ওয়ারেন্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ওয়ারেন্ট ঝুলে রয়েছে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায়।