শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন

আপডেট
ওরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায় : শামীম ওসমান

ওরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায় : শামীম ওসমান

 এস.কে মাসুদ রানাঃ-
নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একে.এম শামীম ওসমান বলেছেন,আপনারা সুযোগ নিতে চান খেলতে চান। আপনারা খেলবেন আমাদের সাথে। কবে খেলবেন বলেন। আমরাও খেলতে চাই। আপনারা ধ্বংসের পক্ষে আমরা খেলবো ধ্বংসের বিপক্ষে। আপনারা খেলবেন সাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে আমরা খেলবো অসাম্প্রদায়িকতার ক্ষেত্রে। ডেট দিন কবে খেলবেন। সারা বাংলাদেশে ঝামেলা করার দরকার কি। আসুন নারায়ণগঞ্জে খেলি। তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশে খেলছেন। সাহেব বলছি নয়ত যদি আবার উপর থেকে মারেন। মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমার সত্যি খালেদা জিয়ার জন্য কষ্ট লাগে। আমি তার জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করি। শেখ হাসিনা বলেছিলেন মানুষ অসুস্থ হলে সে যদি শত্রুও হয় তার জন্য দোয়া করবে। লন্ডন থেকে নির্দেশ আসছে আপনারা বাংলাদেশে বসে লাফাচ্ছেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জের ২নং রেলগেট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতি করার কথা ছিল না বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে। বঙ্গবন্ধু আর পনেরো বছর পেলে বাংলাদেশ জাপানের মত উন্নত দেশ থাকত। আপনারা আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ করেন এটা বলব না। আমি বলব শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের স্বপ্ন না। শেখ হাসিনা আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশের ভবিষ্যত। গত ১৬ আগষ্ট জাতির জনকের কন্যা বলেছেন চতুর্দিক থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আরেকটি পঁচাত্তরের একুশে আগষ্টের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হচ্ছে। জাতির পিতার কন্যাকে বলতে চাই হতে পারেন আপনি নীলকন্ঠী। চেষ্টা করেছি আপনার মত হওয়ার। খোকন সাহাকে নাকি ন্যাংটো করে ঘোরাবে। বলেন, তার আগে চিন্তা করবেন। রাজনীতিতে এই ভাষা চলে না। আপনারা ভাবছেন আপনারা এ ভাষায় কথা বললে আমরা আপনাদের আঘাত করব। আমরা তা করব না। আমাদের ভূল থাকলে ভূল ধরিয়ে দেন। আপনারা তা করছেন না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান দেশে আসলেন। ২২টি সংগঠন গেল, গিয়ে বলল র‍্যাব এটা করেছে সেনাবাহিনী এটা করেছে। এটা কেন বলতে ভুলে গেলেন আমাদের দেশে ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা এসে বসে আছে। এ পুলিশ রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। এই র‍্যাবের ভূমিকা আপনারা অস্বীকার করতে চান? রোহিঙ্গা ইস্যুতো সবচেয়ে বড় বিষয়। বার্মায় গিয়ে কেন বলেন না রোহিঙ্গা ফেরত নাও নয়ত স্যাংশন দেয়া হবে।
সামনে কঠিন সময় আসছে৷ ওরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়। ওরা ওদের জায়গায় ঠিক আছে। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বিভক্ত। বলেছিলাম আমি স্লোগান দিব আপনারা বক্তৃতা দিয়েন। সবাই তো বুঝল না। অনেকেই বুঝে না বোঝান ভান করেন। তারা আমাদের হুমকি দেন। শেখ হাসিনাকে ২১বার মারার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী কত মানুষকে হত্যা রেপ করা হয়েছে পত্রিকায় পাবেন। তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার।
৮১ সনে নেত্রী দেশে ফিরে আকুতি মিনতি করলেন দু রাকাত নফল নামাজ পড়তে। গেটটা জিয়াউর রহমান খুলে দেয়নি। সেখানে বসে একটু কান্নার সময়ও দেননি। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা আর্তনাদ করে কেঁদেছিলেন। আরেক বোন শেখ রেহানা তো কাঁদতেও পারেননি। আপাকে বললাম অনেক হয়েছে আমাদের ছুটি দেন। তিনি বললেন, তোদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তিনি বাংলাদেশকে পৃথিবীর মানচিত্রে মাথা উচু করে দাঁড় করাতে কাজ করে যাচ্ছেন।
আমি জানি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। মানুষের কষ্ট হচ্ছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে। প্রথমে রোহিঙ্গা সমস্যা আসল। তারপর আসল কোভিড। সাউথইস্ট এশিয়ার মধ্যে প্রথম ও সারা বিশ্বে পঞ্চম হলেন শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়েছেন। আল্লাহ তাকে সুস্থ রাখুক। তাদের সময় আমার বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়েছিল আমার বহু লোককে হত্যা করা হয়েছিল। আমি যদি দোয়া করি আল্লাহ অবশ্যই দোয়া কবুল করবেন। লন্ডন থেকে যিদি হুকুম দিচ্ছেন ছেলে হয়ে তো আসলেন না বাংলাদেশে। বুকে কলজে নাই নাকি সাহস নাই। আপনি লন্ডনে আরামে থাকেন নিজের ছেলের বউ তো বড় নামকরা ডাক্তার। শাশুড়ী তো মায়ের মতই। আমার মা যখন অসুস্থ আমার বোনরা যেমন সেবা করেছে আমার বৌও তেমনি সেবা করেছেন। তিনিও তো আসতে পারতেন, আসলেন না। তাদের একজন মেয়েও আছে। দাদীকে দেখতে তো একবারও আসলেন না। যারা তার কথায় নাচছেন তারা কি ভেবেছেন যারা মায়ের জন্য আসে না আপনি বিপদে পড়লে সে কি আপনার জন্য আসবে?
নারায়ণগঞ্জে যারা আওয়ামী লীগ করেন। শেখ হাসিনার বদৌলতে বড় বড় পদ পেয়েছেন। আসুন মাঠে নামুন। ২০২৪ সালে জাতির পিতার কন্যা ক্ষমতায় আসলে আমাকে বলবেন আমি সরে যাবো। পদ পদবী আপনারা নিয়েন। তোলারাম কলেজের ভিপি ছিলাম৷ তখন নয়শ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। আমার বড় ভাইকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ঢাকার রাজপথ দখল করবেন। আমরা কি হাতে চুরি পড়ে বসে আছি। আমাদের মহিলারাই যথেষ্ট। হয়ত কিছু স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি মরবে। বাঁচব কীনা জানি না। কালকে নাও থাকতে পারি। যা করার করেন, ২০২৪ সালে শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
কয়েকদিন আগে জেলা বিএনপির সেক্রেটারি মামুন মাহমুদকে ঢাকায় কস্তুরি হোটেলের সামনে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। স্থানীয় জনতা তাকে পাকড়াও করে পুলিশে দিয়েছেন। সেই ছেলেটা একজন পেইড কিলার। সে বলেছে আমার এলাকারই একজন এক্স এমপির ছেলে তাকে টাকা দিয়েছিল। ধরা পড়ে গেছে নয়ত এটা নিয়ে আবারও ত্বকী হত্যার মত নাটক সাজাবে। ইতোমধ্যে টিভিতে প্রতিবেদনে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়েছে। অনেক কিছুই বের হয়ে এসেছে।
যারা অশুভ খেলা খেলার চেষ্টা করছেন। নারায়ণগঞ্জের মাটি আওয়ামী লীগের ঘাটি শেখা হাসিনার ঘাটি ছিল এবং থাকবে। আওয়ামী লীগে সব ভাল মানুষ না খারাপ লোকও আছে। কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদের বুজুর্গ ইমামকে আওয়ামী লীগের পদবী ব্যবহার করে কটুক্তি করেছে। আমাকে ইমামরা প্রশ্ন করেছেন কেন। আমি আপনাদের সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি ক্ষমা করে দিবেন। অনেকেই ক্ষমা চাইতে শেখেনি।
সমাবেশে লাখও মানুষের উপস্থিতিতে পুরো নগরী স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে সভাপতিত্ব করছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বাবু চন্দন শীল।
দুপুর থেকেই সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী শামীম ওসমানের ব্যানার ফেস্টুন হাতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে হাজির হন।
এতে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রেখেছেন,মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওয়াজেদ আলী খোকন, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম,আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |