সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন
ভারতের কাছে যা যা চাওয়া হয়েছে তারা সব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’-এ তিনি একথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংলাপের উপস্থাপনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যা যা চেয়েছি ভারত সব দিয়েছে। শেখ হাসিনা তিস্তার কথা বলতে ভুলে যাননি। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিছুটা আপত্তি আছে। আশা করি, সেটিও হয়ে যাবে। বিএনপির তো না পাওয়ার হতাশা। আমাদের না পাওয়ার হতাশা নেই। আপনারা ভারতের সঙ্গে দেওয়াল তুলেছেন, আমরা সেই দেওয়াল ভেঙে দিয়েছি। কোন দেশের ছিটমহল এতো শান্তিপূর্ণভাবে হয়নি। আপনারা তো ভুলেই যান আসল কথা বলতে। আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব থাকলে যে সমস্যা সেগুলো সমাধান হবে।
দলের দায়িত্বে থাকার একটা বয়সের সীমারেখা থাকা উচিত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রীর কোন বয়স নেই। মুহিত সাহেব অর্থমন্ত্রী ছিলেন ৮০ বছর পার হওয়া পর্যন্ত। রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। রাজনীতির কোন সময়সীমা থাকা উচিত না, যতক্ষণ তিনি সক্ষম থাকবেন। সে যদি মনে করে আমি অবসরে যেতে চাই সে ছেড়ে দিতে পারে। তার অভিমত প্রকাশের পর দল যদি মনে করে তাকে অবসর দিতে পারে। তাকে সম্মানজনক উপদেষ্টা পদ দেওয়া যেতে পারে। শেষ বয়সে যদি রাজনীতি করতে না পারেন তাহলে তো মৃত্যুর আগেই মরে গেল। সাধারণ সম্পাদক বিষয়ে নেত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটিই কার্যকর হবে।
তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের সরকার, বর্তমান মন্ত্রিসভা কিছুটা দুর্বল বলে মনে করেন কি না- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মন্ত্রিসভায় যারা আছেন তারা দুর্বল নয়। ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে। কিছুটা দুর্বলতা থাকতে পারে। কিন্তু মন্ত্রিসভা দুর্বল নয়। কোন কাজ কিন্তু ঠেকে থাকছে না।
মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আপনারা গণমাধ্যমে লেখালেখি করছেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে। তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন। তিনিই সেটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
নির্বাচনে ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসির সঙ্গে সংলাপে আমরা ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছি। গত নির্বাচনে চেয়েছি, এবারও আমরা বলেছি ৩০০ আসনে ইভিএম চাই। নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে ১৫০ আসনে আগামী নির্বাচনে ইভিএমে ভোট। এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই ঠিক। আমাদের যে দাবি নির্বাচনে কারচুপি জালিয়াতি রোধের জন্য এটি ভালো। নাগরিকরা তো তাদের দাবি তুলতেই পারে, ইসি কি করবে সেটি তো তাদের সিদ্ধান্ত।
নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতিতে আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে, গণতান্ত্রিক রাজনীতি আমরা চাই। রাজনীতিতে আন্দোলন আছে, থাকবে। জনগণের সম্পৃক্ততা আমরা চাই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন এক কথা, সহিংস আন্দোলন তো জনস্বার্থে প্রতিরোধ করতে হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। এখানে সাস্প্রদায়িকতার উপাদান আছে, সেটিও অতিক্রম করতে হবে। সেজন্য বিএনপিকে বলি, আমরা তাদের প্রতিপক্ষ মনে করি কিন্তু তারা আমাদের শত্রুভাবে। আমরা অনেক কিছু সহ্য করছি। রাস্তা অবরোধ করে মানুষের চলাচল বন্ধ করে সংঘাত বাধানো, পুলিশের উপর হামলা করে, কোথাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গায়ে পড়ে কারও সঙ্গে ঝগড়া করবেন না। কিন্তু আমরা যদি হামলায় আক্রান্ত হই তখন কি আমরা চুপচাপ বসে থাকব। কর্মীরা কি চুপচাপ বসে থাকতে রাজি হবে? বিএনপি তো আন্দোলন করে বেগম জিয়ার মুক্তি দিতে বাধ্য করতে পারেনি। কোথায় আপনাদের গণতন্ত্র? আপনার কী মনে আছে কবে আপনাদের কাউন্সিল হয়েছে? বিএনপি কর্মীরাও ভুলে গেছেন কবে তাদের সম্মেলন হয়েছে। বিএনপি কাউন্সিল কথাটাই ভুলে গেছে, তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে।