সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : রাঙ্গুনিয়া থানার মাদক মামলায় অপরাধ না করে ১০ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে ঘুরছে নুরুল বশর, মুক্তি পেতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ও চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজিজ আহমেদ ভূঞার আদালতে আবেদন করেছেন নুরুল বশর।
আদালত আগামী ১০ অক্টোবর শুনানির জন্য রেখেছেন। নুরুল বশর, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বালুখালি সৈয়দের বাড়ীর সৈয়দ কাসিমের ছেলে।
আদালত, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও থানা সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাঙ্গুনিয়ার উত্তর পদুয়ার সুখবিলাস ইসলামিক মিশনারি সেন্টার গেইট থেকে জোহর আলমকে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়
জিজ্ঞাসাবাদে জোহর নিজের নাম গোপন রেখে নুরুল বশরের নাম, পিতা ও মাতার নামসহ পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ব্যবহার করে। কিন্তু নুরুল বশরের আইডি কার্ডে নাম নুরুল বশর থাকলেও মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র ও মামলার রায়ে মো. নুরুল বশর উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে নুরুল বশরের পিতার নাম এনআইডি কার্ডে সৈয়দ কাসিম থাকলেও মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র ও মামলার রায়ে সৈয়দ কাশেম উল্লেখ করা হয়েছে। মায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- কুলসুমা বেগম।
মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেল এর সহকারী উপপরিদর্শক মুহাম্মদ খোরশেদ আলম বাদি হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেলের পরিদর্শক জীবন চাকমা ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ৩ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ আসামিকে জামিন দেন।
১ বছর ৯ মাস ১৮ দিন পর ২০২০ সালের ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান। আদালতে ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন। এদিকে, গত ৬ আগস্ট জোহর আলমকে একটি মামলায় গ্রেফতার করে টেকনাফ থানা পুলিশ। বর্তমানে জোহর কক্সবাজার কারাগারে বন্দি।
জোহর আলম গ্রেফতার হওয়ার আগের একটি ভিডিও সংরক্ষিত আছে। সেখানে জোহর আলমকে বলতে শুনা যায়, আমি হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ করতাম। নুরুল বশরের বাড়িতে তিন-চার দিন কাজ করেছি ও সবার সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়েছি। মারধরের ভয়ে নিজের নাম গোপন করে নুরুল বশরের নাম বলেছি।
বার্মা কিনা প্রশ্ন করেছিল, আমি ভয়ে বাংলাদেশি বলেছি। পরিচয় দিয়েছি- নাম মো. নুরুল বশর, পিতা সৈয়দ কাশেম, মাতা কুলসুমা বেগম। নুরুল বশর পরিচিত কিংবা আত্মীয় নয়। আমি হিসাব করেছি, জেল থেকে কেউ মোহাব্বত করলে বের হতে পারবো। না হয় নুরুল বশর নামে জেলে জীবন কাটিয়ে দিতাম।
নুরুল বশরের আইনজীবী সেলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, নুরুল বশরের নাম ঠিকানা জালিয়াতি করে ব্যবহার করে মূল আসামি জোহর আলমের জালিয়াতির রহস্য উদঘাটন এবং এর সঙ্গে জড়িত জোহরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও প্রতিকার চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী ১০ অক্টোবর নিয়মিত আদালতে শুনানির জন্য রেখেছেন।