বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন

আপডেট
এবার ডোলমা খাং চূড়ায় বাংলাদেশি নারী

এবার ডোলমা খাং চূড়ায় বাংলাদেশি নারী

হিমালয়ের ৬ হাজার ৩৩২ মিটার উঁচু ডোলমা খাং পর্বতচূড়া জয় করেছেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী শায়লা বিথী। তিনিই প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে দুর্গম এ পর্বতচূড়ায় পা রাখেন। গতকাল রোববার (৬ নভেম্বর) পর্বত থেকে সফলভাবে নেমে আসেন তিনি । এর আগে গত শনিবার সকাল ৮টা ২০মিনিটে পর্বতচূড়ায় পৌঁছান।

এর আগে গত শনিবার ( ২৯ অক্টোবর) অভিযানের উদ্দেশে ঢাকা থেকে বিমানযোগে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর উদ্দেশে যাত্রা করেন। ৩১ অক্টোবর কাঠমান্ডু থেকে ডোলমা খাং এর উদ্দেশে রওনা হন শায়লা বিথী। সেদিন চেট চেট নামের একটি এলাকা থেকে ট্রেকিং শুরু হয়। শায়লা বিথীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় একজন শেরপা। তিন ঘণ্টার ট্রেকিংয়ের পর তারা সিমিগাঁও নামের একটি গ্রামে পৌঁছান। পরদিন সকালে আবারো শুরু করেন ট্রেকিং।

পরবর্তীতে এদিন সিমিগাও থেকে ডংগাং গ্রামে পৌছান। পরবর্তী দিন বেদিং গ্রামে পৌছান। পরিকল্পনা অনুযায়ী বেদিং গ্রাম থেকে পরবর্তী দুদিনে না নামের একটি গ্রাম হয়ে এক্লাটামাইজেশনের জন্য ইয়ালুংরি পর্বতের বেসক্যাম্প যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি বেদিং গ্রাম ডোলমাখাং হাইক্যাম্প চলে যান। এখান থেকে রওনা হয়ে ৫ নভেম্বর সকাল ৮টা ২০মিনিটে ডোলমা খাং চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকার উড়ান শায়লা বিথী। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করে শুরু হয় নামার পালা। পর্বত চূড়া থেকে ফিরে এসে হাইক্যাম্প অবস্থান করার কথা থাকলেও তিনি বেদিং গ্রামে ফিরে আসেন। সেখান থেকে রোববার সিমিগাও আসেন। এরপর কাঠমান্ডুতে।

এই পর্বতারোহী জানান, ডোলমা খাং পর্বতটির চূড়ার দিকের অংশ খুবই দুর্গম। এ পর্বতে এখন পর্যন্ত খুব বেশি অভিযান পরিচালনা হয়নি। সে কারণে আমাদের জন্য শীর্ষে আরোহন করা খুবই কঠিন কাজ ছিল। অনেকখানি খাড়া পর্বত বেয়ে উঠতে হয়েছে। চূড়ার আগে খুবই সরু একটা রিজ লাইন পাড়ি দিতে হয়েছে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। একটুখানি এদিক সেদিক হলেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তিনি বলেন, ‘ডোলমা খাং শীর্ষে আরোহন করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। দেশের পতাকা শীর্ষে তুলে ধরতে পারার মধ্যে অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে। পর্বতচূড়ায় আমি যুদ্ধবিরোধী বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে নিয়ে যাই ও ছবি তুলি। এ ছবিগুলো যুদ্ধবিরোধী প্রচারে ব্যবহার করব।’

প্রসঙ্গত, এই নিয়ে শায়লা বিথীর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে নয়টি পর্বতাভিযান, ট্রেকিং ও ট্রেনিং। তিনি গত বছরের অক্টোবরে হিমালয়ের ৬ হাজার ১৮৯ মিটার উঁচু আইল্যান্ড পর্বতচূড়া জয় করেন। এছাড়াও এর আগে এই পর্বতারোহী ২০১৬ সালে ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টিনিয়ারিং থেকে পর্বতারোহণের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১৮ সালের মে মাসে তিব্বতের লাকপারি (৭ হাজার ৪৫ মিটার) পর্বতচূড়া জয় করেন। ২০১৯ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে হিমালয়ের দুর্গম তাশিলাপচা (৫ হাজার ৭৫৫ মিটার) গিরিপথ পার হন। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০২১ সালের নভেম্বরে হিমালয়ের বিখ্যাত থ্রি-পাস অতিক্রম করেন।

এছাড়া শায়লা বিথী ২০১৫ সালে নেপালের মাউন্ট কেয়াজুরির বেসক্যাম্প (১৫ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা) ট্রেকিং করেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সফলভাবে নেপালের মেরা পর্বতের চূড়ায় (৬ হাজার ৪৭৪মিটার) ওঠেন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে নেপালের থ্রংলা পাস (৫ হাজার ৪১৬ মিটার) অতিক্রম করেন। ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রথম বাংলাদেশি দলের অংশ হয়ে মানাসলু সার্কিট (৫ হাজার ১০৬ মিটার) সম্পন্ন করেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |