শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: গত বছরের আগস্টে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ছয় টাকা বাড়ানোর পর আট মাসের মাথায় আবার ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি সারের দাম ৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে আবারও কৃষকের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হোসেন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য বাড়ার কারণে আমদানি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারের মূল্য পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ৩ এপ্রিল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘সার বিষয়ক জাতীয় সমন্বয় ও পরামর্শক কমিটির সভা’ শেষে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছিলেন, অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে দেশে সারের দাম বাড়বে না। এ বছর সারের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। মন্ত্রীর এই বক্তব্যের এক সপ্তাহের মাথায় বেড়ে গেল সারের দাম।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সামনে সাংবাদিকদের কাছে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সারের দাম বাড়াতে সরকার বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দাম বাড়ানোর কারণে কৃষকের ওপর চাপ পড়বে, তবে উৎপাদন কমবে না। আমরা চাইবো বীজ বা অন্যভাবে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে। আমি চাইনি কোনোভাবেই সারের দাম বাড়ুক। প্রধানমন্ত্রীও বলেছিলেন সারের দাম না বাড়াতে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত বাড়াতেই হলো।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দাম যা বেড়েছে এটাও বৈশ্বিক সারের যে দাম বেড়েছে সে তুলনায় বাড়েনি। এখনো সরকারকে সারে বিপুল পরিমাণ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। তবে বৈশ্বিক দাম কমে এলে সারের দাম সমন্বয় করা হবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বোরো ধানের আগ পর্যন্ত সারের চাহিদা বেশি থাকে। এরপর সারের চাহিদাও কমে আসবে। তাই এই দামে খুব সমস্যা হবে না।
তবে সারের দাম বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতিতে আবারও প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। মঙ্গলবার একনেক সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সারের দাম বৃদ্ধিতে কিছুটা প্রভাব পড়বে মূল্যস্ফীতিতে। কতটুকু পড়বে; এটা হিসেব কষে বলতে হবে। আমি বিজ্ঞানী নই, গবেষণা করে এটা বলতে হবে।’
ইউরিয়া সারের দাম আগে ডিলার পর্যায়ে ছিল কেজিপ্রতি ২০ টাকা, এখন ২৫ টাকা; কৃষক পর্যায়ে আগে ছিল ২২ টাকা এখন ২৭ টাকা। কৃষক পর্যায়ে এখন ডিএপির দাম কেজিতে ২১ টাকা, টিএসপি ২৭ টাকা, টিএসপি ও এমওপি ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১ আগস্ট ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ১৪ থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা পুনর্র্নিধারণ করে সরকার।
কে,আই,এ/ঈ,ম