শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২২ পূর্বাহ্ন

আপডেট
আড়াই মাস পর প্রকাশ্যে, মধ্যরাতে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মিছিল ফুলবাড়িয়ায় সাবেক এমপি-ওসি-মেয়রসহ ১৮৫ জনকে আসামি করে মামলা দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে সাবেক স্ত্রীর হামলা আহত ৩ দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ ‘ইমানদার এসআই রফিকুলের আজ চতুর্থ দফায় দলগুলোর সঙ্গে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা এমপি হওয়ার পথ ধরে এগিয়েছেন মন্ত্রিত্বের পথে, আর গড়েছেন সম্পদের পাহাড় গাজার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলা, ২১ নারীসহ নিহত ৩৩ সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার গ্রেপ্তার আজ চতুর্থ দফা সংলাপের বসছেন প্রধান উপদেষ্টা, গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয় বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আভাস, রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে
হাইকোর্ট ঘুরে এক সন্তানকে দেখার অনুমতি পেলেন মার্কিন বাবা

হাইকোর্ট ঘুরে এক সন্তানকে দেখার অনুমতি পেলেন মার্কিন বাবা

হাইকোর্ট

আমেরিকান বাবা গ্যারিসন লুটেল সপ্তাহে দুই দিন তার তিন বছরের ছেলে সন্তানকে দেখতে যেতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত তার আদেশে আরও বলেছেন, ঢাকার উত্তরা ক্লাবে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মা ফারহানা করিম শিশুটিকে নিয়ে আসবেন। সেখানে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিশু মায়ের তত্ত্বাবধানেই থাকবেন। এসময় বাবা গ্যারিসন লুটেল সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন।

তবে আরেক সন্তানের বয়স এক মাস হওয়ায় তাকে দেখার অনুমতির বিষয়ে কোনও আদেশ দেননি আদালত।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে সন্তানের বাবা গ্যারিসনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ। অন্যদিকে শিশুদের মা ফারহানা করিমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

শুনানির সময় মার্কিন বাবা গ্যারিসন লুটেল ও বাংলাদেশি মা ফারহানা করিমে বক্তব্য শোনেন আদালত। রুদ্ধদ্বার কক্ষে তাদের বক্তব্য শোনা হয়।

এর আগে সন্তানদের কোনও খোঁজ-খবর না পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে ছুটে আসেন গ্যারিসন। বাংলাদেশে এসে সন্তানদের আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তিনি। রিটের শুনানি নিয়ে দুই শিশু সন্তানসহ তাদের বাংলাদেশি মা ফারহানা করিমকে আদালতে হাজির করতে আদেশ দেন হাইকোর্ট। উত্তরা থানা পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক গ্যারিসন লুটেল পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারহানা করিমকে ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। ঢাকার উত্তরায় তাদের বাসা। ফারহানা স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস করেন। তিন বছর আগে তাদের প্রথম একটি সন্তান হয়। যুক্তরাষ্ট্রে ফারহানা ও গ্যারিসনের নিজস্ব বাসা ছিল। এ বছরের শুরুর দিকে ফারহানা আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জুন মাসে ফারহানা করিম বাংলাদেশে চলে আসেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে তার বোন-মায়ের সঙ্গে থাকা জরুরি এই কথা বলে তিনি বাংলাদেশে আসেন। আসার পর তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সন্তানদের কথা চিন্তা করে গ্যারিসন ফারহানাকে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছিলেন।

তবে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে অক্টোবর মাসে তিনি বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে আসার পর গ্যারিসন যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ফারহানা দেখা করতে চান না, বাচ্চাদেরও দেখাতে চান না। এক পর্যায়ে উত্তরা থানার পুলিশ ও গ্যারিসন যে হোটেলে থাকতেন তাদের সহযোগিতা নিয়ে ফারহানার বাসায় যান। বাসায় গিয়ে জানতে পারেন, ফারহানা করিম কানাডিয়ান এক ব্যক্তির সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি কানাডিয়ান ওই ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেন। এদিকে, এক মাস আগে আরেকটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন ফারহানা।

আইনজীবীরা বলেন, সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, তিনি গ্যারিসনকে হাসপাতালের কাগজ দেখিয়ে বলেছেন দ্বিতীয় সন্তান গ্যারিসনের না। এ সন্তান তার পার্টনার কানাডিয়ান নাগরিকের। তিনি একটা ম্যারেজ ডকুমেন্ট দেখিয়ে বলেছেন, কানাডিয়ান নাগরিককে বিয়ে করেছেন। কিন্তু আমেরিকান নাগরিক গ্যারিসনের সঙ্গে তার এখনও ডিভোর্স হয়নি। গ্যারিসনের বাংলাদেশে আসার অন্যতম কারণ, পুরান ঢাকার একজন কাজী যুক্তরাষ্ট্রে একটি কাগজ পাঠায়। সেটি তালাকের নোটিশ। মুসলিম পারিবারিক আইনে একটি তালাকের নোটিশ পাঠান।

ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ বলেন, আমরা আদালতে বলেছি, নোটিশটা ইনভ্যালিড। কারণ তাদের বিয়ে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট অব মিজোরির আইন অনুযায়ী। ডিভোর্স হলে স্টেট আইনে হতে হবে।

বাংলাদেশে আসার পর গ্যারিসন উত্তর সিটি করপোরেশনে যান। সিটি করপোরেশন থেকে কাগজপত্র দেখে তারা বলেন, নোটিশ এভাবে হয় না। আমরা তারপর কাজীর কাছে গিয়েছি। তিনি খুব বেশি সহযোগিতা করেননি। তিনি আমাদের থেকে একটি দরখাস্ত রেখেছেন। বিয়ে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী। অথচ তিনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন মুসলিম পারিবারিক আইনে, এটা তিনি আইনত পারেন না। আর নোটিশ যখন ইস্যু করা হয়েছে তখন ফারহানা অন্তঃসত্ত্বা।

তিনি আরও বলেন, অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় তো নোটিশ পাঠানোর কোনও সুযোগ নেই। নোটিশের বিষয়ে তিনি দেওয়ানি মামলা করেছেন। পাশাপাশি সন্তানদের হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট দুই শিশু সন্তানসহ তাদের মাকে হাজির হতে আদেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশের ধারাবাহিকতায় তিনি আজ হাজির হয়েছিলেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |