রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
ফয়সাল হাওলাদার :
বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের বাজারে মিলছে ভারতীয় চিনি। আর তা দেদারচে আসছে সীমান্ত গলিয়ে। এসব চিনি এতোটাই নিম্নমানের যে, তা খেয়ে সহসাই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। আর এর পরিমাণ প্রায় ২৮ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চোরাচালান প্রতিরোধ করা না গেলে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে বসেছে সরকার। বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেলো, রমজানে দেশে চিনির বাড়তি চাহিদা থাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার অন্তত ২৭টি চোরাইপথ দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারতের নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর ভেজাল চিনি দেশে ঢুকছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানেও এসব অবৈধ চিনি আসা ঠেকানো যাচ্ছে না। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর চিনি খাওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা বিদ্যমান।
ভূক্তভোগীরা বলছেন, বৃহত্তর সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও অন্যান্য সীমান্ত গলিয়ে সবচেয়ে বেশি চিনির চোরাচালান হচ্ছে। ছাতক থানার শান্তিগঞ্জে চোরাই পথে আনা ২৩৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করেছে সুনামগঞ্জের হাইওয়ে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশের প্রধান এডিশনাল আইজি শাহাবুদ্দিন খান বলেন, তাঁরা এর আগেও চোরাচালানের যুক্ত থাকা বেশ কজনকে আটক করেছে। এবার চোরাচালানের মাত্রা বেড়েছে। পুলিশ জানায়, কাভার্ডভ্যানে তল্লাশি করে ২৩৫ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ ভ্যানটি জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ১৬ লাখ টাকার বেশি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-কাভার্ডভ্যান চালক ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার তেঘরীহুদা গ্রামের মোশারফ হোসেন, তাহিরপুর থানার লোহাজুড়ি ছড়ারপাড় গ্রামের বাছির মিয়া। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাইওয়ে থানার ওসি কবির আহমদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় চিনিসহ চোরাকারবারিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এক এক সপ্তাহে সিলেটের বিশ্বনাথে প্রায় ছয় হাজার কেজি ভারতীয় চিনি ও একটি ট্রাকসহ পাঁচ চোরাকারবারিকে আটক করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এদিন সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্বনাথ পৌর শহরে জানাইয়া গেটসংলগ্ন সড়ক থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকরা হলেন- সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থানার মাঝাইর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৫), তাহিরপুর থানার বাদাঘাট সোহালা গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে আসাদুর রহমান (২৮), একই গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে ফাহিম রেজা (২৫), মো. রইছ মিয়ার ছেলে এস এম তুষার আহমদ রাজ (২৪), জামালগঞ্জ থানার শরীফপুর গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে নবী হোসেন (৩৫)। এ ব্যাপরে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ১২০ বস্তা (প্রায় ছয় হাজার কেজি) চিনিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ ও সিলেট শুধু নয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার অন্তত ২৭টি চোরাই পথ দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারতের নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর ভেজাল চিনি দেশে আসছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিনই অবৈধভাবে দেশের জনগণের চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশই নিম্নমানের চিনি অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে
দেশের বাজারে অনুপ্রবেশ ঘটছে। রমজান মাসজুড়ে চিনির ব্যাপক চাহিদা থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের চিনি কমদামে বাজারজাত করে আসছে। এই চিনিগুলো মূলত আসে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে চোরাই পথে। অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশি ব্র্যান্ড ফ্রেশ, দেশবন্ধু, তীর, এস আলমসহ বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের নাম এবং বস্তা ব্যবহার করছে। এপারে আসার পর তারা ইচ্ছেমতো বস্তা ও লেবেল জুড়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের নামি দামি কোম্পানির। এসব নিম্নমানের চিনি জালিয়াতি করে ব্র্যান্ডের চিনির বস্তায় ঢুকিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে ঐসব ব্র্যান্ড আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্র্যান্ড ইমেজও নষ্ট হচ্ছে। দ্বিতীয়ত এসব চিনি খাওয়ার পরে মানুষের মাঝে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবৈধভাবে আসা চিনির মান নিয়ন্ত্রেণের কোনো ব্যবস্থা নেই। ভোক্তা সাধারণ নিম্নমানের চিনি কম দামে গ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন। এসব নিম্নমানের চিনি মানব শরীরে নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করে। এ ভেজাল চিনি বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
জানা গেছে, দেশের সাধারণ ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে দেশীয় চিনি কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে ভালো এবং গুণগতমানসম্পন্ন চিনি বাজারজাত করে আসছে। এই রমজানেও তার ব্যতিক্রম নেই। দেশে রোজা ও কোরবানির ঈদসহ সারা বছরে চিনির চাহিদা আনুমানিক ২৪ লাখ টন। বেসরকারি বৃহৎ চিনির মিলের সংখ্যা পাঁচটি। যার আনুমানিক উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ১৫ হাজার টন। সারাদেশে দৈনিক চাহিদা সাড়ে ছয় হাজার টনের বেশি নয়। অর্থাৎ আমাদের দেশের মিলগুলোতে চাহিদার দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। অথচ প্রতিদিনই অবৈধভাবে দেশের জনগণের চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ নিম্নমানের চিনি অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে দেশের বাজারে অনুপ্রবেশ ঘটছে; যা অতিশীঘ্রই বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের চিনি শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
ভারত থেকে চোরাই পথে আসা চিনি স্থানীয়ভাবে ‘বুঙ্গার চিনি’ নামে পরিচিত। প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে চিনি চোরাচালানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চিনি উদ্ধার করছে পুলিশ। তারপরও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে হোতা।
মাত্র অল্পদিনের ব্যবধানে হাজার হাজার বস্তা চিনিসহ চোরাকারবারিদের আটক করেছে আইনশঙ্খলাবিাহিনী। গত ৭ মার্চ কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের চোরাইভাবে আসা ২৯০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অভিযানে অবৈধভাবে আমদানি করা ৫০ কেজির ২৯০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করলেও পাচারে ব্যবহৃত দুটি ট্রাক আটক করা যায়নি। এ সময় চিনির গোডাউন সিলগালা করা হয়। শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আকনজী জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি ভারতীয় কোম্পানির ২৯০ বস্তায় মোট ১৪ হাজার ৫০০ কেজি চিনি জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৯ লাখ টাকা। স্থানীয়রা জানান, চিনি পাচারকারী এই চক্রের কয়েকজন মিলে দীর্ঘ দিন ধরে ভারত থেকে চোরাই পথে কম দামে ভারতীয় চিনি
এনে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছিল।
দিনে দিনে চোরাকারবারিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা ছাড়াও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার সকল চোরাই পথ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় চিনি, পেঁয়াজ, কসমেটিক্স, প্রশাধনী, পোশাক, ফলমূল ও গবাদিপশু। অভিযোগ রয়েছে, সীমান্তের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিরাপদে চোরাই পণ্য দেশে প্রবেশ করানো হয়। তাদের সহযোগিতায় রয়েছে আরেকটি চক্র। তারা নিজেদের পুলিশ এবং সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। প্রতিদিন কয় হাজার বস্তা চিনি বা পেঁয়াজ বের হয় এসব রুটে তার হিসাব অনুযায়ী হয় দর কষাকষি। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্ বলেন, সুনামগঞ্জে আমরা বড় বড় চালান জব্দ করেছি। এসব কাজে সীমান্তের গুটিকয়েক লোক জড়িত রয়েছে। চোরাচালান বন্ধে আমরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে আঞ্চলিক সড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে বেপরোয়াভাবে চোরাকারবারিরা অবৈধভাবে ভারত থেকে প্রতিদিন শত শত বস্তা চিনি নিয়ে আসছে। বেপরোয়া চোরাচালান নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও থেমে নেই চোরাকারবারিরা। বিশেষ করে দেশে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েকশ চোরাকারবারি ভারতীয় চিনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তারা প্রতিদিন কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী সুরইঘাট, লোভাছড়া, মুলাগুল বড়গ্রাম, মঙ্গলপুর, সোনারখেওড়, দনা, কাড়াবাল্লা, বড়বন্দসহ আরো কয়েকটি স্পট দিয়ে হাজার হাজার বস্তা চিনি ভারত থেকে অবৈধভাবে দেশে এনে প্রকাশ্যে লোভা-সুরমা নদীর নৌপথে ও বিভিন্ন সড়ক দিয়ে কানাইঘাটের হাটবাজারসহ বাসাবাড়িতে মজুত করে রাখে। পরে তা দেশীয় বিভিন্ন চিনি কোম্পানির বস্তা পরিবর্তন করে বড় বড় কনটেইনার ও ট্রাকে করে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। মাঝে মধ্যে বিজিবি, র্যাব, ডিবি পুলিশ ভারতীয় চিনির ছোট-বড় চালান আটক করলেও থেমে নেই চোরাকারবারিরা।
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর সীমান্ত পার হয়ে অবৈধভাবে আসছে ভারতীয় চিনি। প্রায়ই জেলা পুলিশের অভিযানে জেলার বিভিন্ন সড়কে জব্দ করা হয় ভারতীয় চিনি। চোরাকারবারিরা এ দুই উপজেলার কয়েকটি সীমান্ত পথ দিয়ে চিনি এনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সীমান্ত চোরাচালান দ্বন্দ্বে গত এক বছরে একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকসহ পাঁচটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। আর চোরাকারবারিদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলার দুর্গাপুরে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৪৭৫ কেজি (৫৫ বস্তা) ভারতীয় চিনিসহ একজন চোরাচালানিকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় চোরাচালান কাজে ব্যবহারের একটি কার্গো ট্রাক জব্দ করা হয়। উপজেলার ঝানজাইল এলাকা থেকে এসব চিনি আটক করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ পথে আসছে চিনি। সেসব চিনি ছড়িয়ে পড়ছে স্থানীয়সহ জেলা-উপজেলার বিভিন্ন বাজারে। এ কারণে অবৈধভাবে আসায় সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব, অন্যদিকে দেশের চিনি শিল্পে ঘটছে ব্যাপক ক্ষতি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটি অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে দেশের বাজারের তুলনায় দাম কমে পাওয়ায় এ চিনির কারবার বেড়েই চলেছে এবং স্থানীয় বাজারসহ জেলার অধিকাংশ বাজারে ওই চিনিতে সয়লাব হয়ে গেছে বলে দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের। স্থানীরা বলছে, উপজেলার গোপীনাথপুর ও বায়েক ইউনিয়নের সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি।
বায়েক ইউনিয়নের গোরাঙ্গলা, পুঠিয়া, খাদলা, মাদলা, শ্যামপুর, কুল্লাপাথর এবং গোপীনাথপুর সীমান্তের ধ্বজ নগর, মুতিনগর, কাজিয়াতলী, বাগানবাড়ি, পাথারিয়া দ্বার ও লতুয়ামুড়া এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চিনি দেশে প্রবেশ করে। এক শ্রেণির চোরাকারবারি সীমান্ত এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষদের চিনি চোরাচালানের কাজে ব্যবহার করেন। কাটাতারের বেড়া পার করে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের পাশাপাশি, রাতে পিকআপ ভ্যানে করে এসব চিনি ছড়িয়ে যায় জেলার বিভিন্ন বাজারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বায়েক ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার শতাধিক মানুষ চিনি চোরাচালান ও পাচারে জড়িত। প্রতিদিন প্রায় ৩০-৪০ টন চিনি পাচার হয়ে দেশে আসছে। দেশের বাজারের তুলনায় ভারতে চিনির দাম কম হওয়ায় চোরাকারবারিরা সুযোগ নেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, কসবায় অবৈধপথে আনা চিনি উদ্ধারসহ ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই কাজ করছে পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ চিনি উদ্ধারসহ চোরাকারবারি আটক হয়েছে। অবৈধ পথে আসা পণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেও কাজ করছে পুলিশ।’
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় অবৈধ পথে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের চিনি আসছে ভারতীয় সিমান্তবর্তী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা এবং কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নয়নপুর এলাকা দিয়ে। সেসব চিনি মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার ও বাঙ্গরা বাজার এলাকা থেকে বিক্রি হচ্ছে পার্শবর্তী উপজেলা দেবিদ্বার, তিতাস, মেঘনা, হোমনা, নবীনগর, বাঞ্ছারামপুরের বিভিন্ন বাজারে। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা সদরের প্রয়াত হাজী শুক্কুর আলীর ছোট ছেলে জামাল বাহিনীর ১৭ সদস্যবিশিষ্টি একটি চোরাকারবারি চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে এসব চিনি ক্রয়-বিক্রয়। অন্যদিকে দেশের বাজারের তুলনায় দাম কমে পাওয়ায় এ চিনির কারবার বেড়েই চলেছে এবং স্থানীয় বাজারসহ জেলার অধিকাংশ বাজারে ওই চিনিতে সয়লাব হয়ে গেছে বলে দাবি স্থানীয় সচেতন মহলের।