শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন

আপডেট
নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ২৬১ কয়েদির আত্মসমর্পণ

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ২৬১ কয়েদির আত্মসমর্পণ

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ২৬১ কয়েদির আত্মসমর্পণ

নরসিংদী প্রতিনিধি :
নরসিংদী জেলা কারাগারে দুর্বৃত্তরা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্র লুটের সময় ৮২৬ কয়েদি পালিয়ে গেছেন। এর মধ্যে বুধবার (২৪ জুলাই) বিকাল পর্যন্ত ২৬১ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা নরসিংদী জেলা দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করছেন বলে জানা গেছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে মঙ্গলবার ১৩৮ ও বুধবার ১২৩ জন আত্মসমর্পণ করেন। পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের আত্মসমর্পণ করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে।

এদিকে বুধবার দুপুর দেড়টায় নরসিংদী জেলা কারাগার পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার উজ-জামান। জানা গেছে, নরসিংদী জেলা কারাগারটি শহরের ভেলানগরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত। এই ভেলানগর ও জেলখানা মোড়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কয়েক দিনই লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ করছিলেন।

শুক্রবারও সেখানে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছিলেন। তবে সেদিন সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের খুব একটা দেখা যায়নি। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হঠাৎ হাজারো জনতা কারাগারের দিকে এগোতে থাকে। তারা গিয়ে সেখানে প্রথমে ইটপাটকেল, পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। হামলাকারীদে হাতে লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এ সময় প্রাথমিকভাবে কারারক্ষীরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

কিন্তু একপর্যায়ে কারারক্ষীরা পিছু হটে। তখন হামলাকারীরা কারাগারের দুদিকের ফটক অনেকটা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় হামলায় চার কারারক্ষী গুরুতর আহত হন। পরে কারারক্ষীরা নিরুপায় হয়ে জেলখানার ভেতরে ঢুকে নিজেদের রক্ষা করেন। জেল কোড অনুযায়ী গুলি করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা মূল কারাগারের ভেতরে ঢুকে সেলগুলো শাবল ও লোহার জিনিসপত্র দিয়ে ভেঙে কয়েদিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিছু কারারক্ষীর কাছ থেকে চাবি নিয়েও সেলের তালা খোলা হয়।

হামলা ও অগ্নিসংযোগে কারাগার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অফিস কক্ষ, কনডেমড সেল, রান্নাঘর, খোলা চত্বর সব জায়গায় তাণ্ডবের চিহ্ন। দরজা-জানালাগুলো ভেঙে গেছে, দেয়ালে দেয়ালে ছিল পোড়া চিহ্ন। এদিকে হামলাকারীরা কারাগার থেকে ৮৫টি অস্ত্র ও আট হাজারের বেশি গুলি ছিনিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার রাইফেলের এবং শটগানের গুলি রয়েছে এক হাজার ৫০টি। তবে মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত মোট ৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন কয়েদি। তাদের কারাগারের আশপাশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৩৩টি, এক হাজার গুলি এবং অসংখ্য হাতকড়া উদ্ধার করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |