রাশেদ, সারিয়াকান্দি প্রতিনিধি: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জমির আইলে পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন মাহমুদুল হাসান মডার্ন। আইলে লাগানো মাত্র ২৫ টি গাছ থেকে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতি সপ্তাহে ১২০০ টাকার পাঁকা পেঁপে বিক্রি করছেন তিনি। কোনও গাছে ১ মণেরও বেশি পরিমাণে পেঁপে ধরেছে।
জমির আইল ফেলে না রেখে সেখানেও কিছু করা যায় কিনা এ চিন্তা থেকেই মাত্র ১৫ শতাংশ একটি জমির চারপাশের আইলে পেঁপেঁগাছ রোপণ করেন কৃষি উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের গোলাম মোহাম্মদের ছেলে।
জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে তিনি তার জমির চারপাশে ১০০ টির বেশি পেঁপেগাছ রোপণ করেন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তার জমির দুইপাশের আইলের পেঁপেগাছ মরে যায়। বর্তমানে জমির ২ পাশের আইলে মাত্র ২০ থেকে ২৫ টি গাছ টিকে আছে। তবে এই ২৫ টি গাছেই ভালো ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে ২০ কেজি থেকে শুরু করে ১ মণ পর্যন্ত পেঁপে হয়েছে। গত জুন মাস থেকে তিনি পাঁকা পেঁপে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছেন। প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ কেজি পাঁকা পেঁপে ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি করছেন। যা প্রতি সপ্তাহে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত। বলা চলে পতিত ধানক্ষেতের আইল থেকেও মাহমুদুলের মাসিক আয় ৪৮০০ টাকা থেকে ৬৪০০ টাকা। মাহমুদুল যখন জমির আইলে পেঁপে গাছ লাগান তখন জমিতে ভুট্টার চাষ ছিল। ভুট্টা হারভেস্টিং করার পর তিনি জমিতে ধান চাষ করেছেন।
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ন্যায় এ বছরও উপজেলায় ৫ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। পেঁপে গাছের গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৩৫ টন। সাধারণত সারা বছরই পেঁপে চাষ হয়। তবে মাঘের শেষে বা ফাল্গুনের শুরুতে পেঁপেগাছ রোপণের উত্তম সময়। রোপণের সাধারণত ৩ মাসের মধ্যেই ফল ধরে।
কৃষক মাহমুদুল হাসান বলেন, জমির আইল ফেলে না রেখে সেখানেও কিছু করা যায় কিনা, এ চিন্তা থেকেই জমির আইলে পেঁপে গাছ রোপণ করেছি। যে কয়টি গাছ বেঁচে আছে, সেখান থেকেও প্রতি সপ্তাহে প্রচুর পরিমানে পাঁকা পেঁপে বাজারে বিক্রি করছি। সবগুলো গাছ যদি বেঁচে থাকতো তাহলে আরও অনেক বেশি লাভবান হতাম।
সারিয়াকান্দি কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, পেঁপে কাঁচা এবং পাঁকা দুইভাবেই খাওয়া যায়। অফ সিজনে এটি গরীবের সবজির চাহিদার একটি ভালো যোগান। বাজারে সবজি আকারেও পেঁপের ভালো দাম রয়েছে। কাঁচা এবং পাঁকা উভয় প্রকার পেঁপের পুষ্টিগুণ খুবই বেশি। এটি কোনও কোনও রোগের চিকিৎসায় পথ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
এ উপজেলায় কৃষকরা পেঁপে চাষ করে বাজারে ভালো দাম পেয়ে ধারাবাহিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :