সালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ৮ সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৩৯ এএম

কুমিল্লার দেবিদ্বারে সালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আট সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিকদের মারধরের পাশাপাশি তাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সাংবাদিকরা হলেন দৈনিক দিনকালের প্রতিনিধি পারভেজ সরকার, এশিয়ান টিভির নেছার উদ্দিন, দৈনিক আজকের কুমিল্লা প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন, দৈনিক ডাক প্রতিদিনের মো. আনোয়ার হোসেন, দৈনিক আমার দেশের আবু বক্কর ছিদ্দিক, দৈনিক কালবেলার জহিরুল ইসলাম মারুফ, দৈনিক ভোরের দর্পণের মো. শাহজালাল ও এটিএন (এমসিএল) নিউজের সাইফুল ইসলাম সজিব।

এ ছাড়া হামলায় সাংবাদিক সোহরাব হোসেনের মা-বাবা এবং ছোট বোনও আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাংবাদিক পারভেজ সরকার, নেছার উদ্দিন, সোহরাব হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন ও সোহরাব হোসেনের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাহাবাদ গ্রামের উটখাড়া মাজারের খাদেম মৃত আব্দুল খালেক ফকিরের স্ত্রী কমলা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সাহেব বাড়ির শাহজাহানের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বেশ কয়েকবার হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায় শাহজাহানের পক্ষ।

এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও সমাধান না হওয়ায় তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এরই মাঝে গত ৯ সেপ্টেম্বর কমলা খাতুনের বসতবাড়ির একমাত্র চলাচলের রাস্তা পাকা দেয়াল নির্মাণ করে বন্ধ করে দেয় শাহজাহান। এ ঘটনায় কমলার নাতি সাংবাদিক সোহরাব হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দেবীদ্বার থানায় আবেদন করেন। পরে ইউপি সদস্য লিটন মিয়া স্থানীয় সালিস বসানোর চেষ্টা করেন।

এ নিয়ে আজ বিকেলে সালিস হওয়ার কথা ছিল। সালিসের সংবাদ সংগ্রহ করতে এসে উপস্থিত সাংবাদিকরা রাস্তা বন্ধের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে স্থানীয় হাকিম মিয়ার চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। তখন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন দুর্বৃত্ত শাহজাহানের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা সাংবাদিকদের মোবাইল, ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, ‘সোহরাব হোসেনের পরিবারকে প্রায় এক মাস ধরে রাস্তা বন্ধ করে জিম্মি রাখা হয়েছে।

সালিসের আগেই সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য নিতেই হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা আমাদের মোবাইল, ক্যামেরা ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। গুরুতর আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি সদস্য লিটন মিয়া জানান, ‘রাস্তা বন্ধের ঘটনায় আজ সালিস ডাকা হয়েছিল। সালিসের আগেই ঘটনাস্থলে হামলা হয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈনুদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিকদের খোঁজখবর নিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!