ছাত্রদল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদ: ঢাবিতে ছাত্রদল, পুরান ঢাকায় জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক , প্রতিদিনের কাগজ

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:৩৭ এএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদল। একই ঘটনায় রাজধানীর পুরান ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর, হলপাড়া ঘুরে মিছিল নিয়ে আবার টিএসসির ডাস চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শাখা ছাত্রদল।

সমাবেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সাহসী সহযোদ্ধা জোবায়েদ হোসেনকে দুষ্কৃতকারীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আগস্ট-পরবর্তী সময়ের অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তার চাদরে দেশকে ঢেকে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খুন, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘আমি শুধু দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, জোবায়েদ হোসেনের হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে হত্যাকারীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল বিক্ষোভ মিছিল করেই থেমে থাকবে না, বরং আমাদের বিক্ষোভ-সমাবেশকে আরও বেগবান করার জন্য আমরা আমাদের মতো করে কর্মসূচি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করব।’

কবি জসিমউদ্‌দীন হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামীম বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত দেখেছি, সাম্য (শাহরিয়ার আলম সাম্য) হত্যার বিচার পাইনি। পারভেজ হত্যাকাণ্ডের বিচারও হয়নি। সুতরাং আমরা আশঙ্কা করছি, জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের বিচারও হয়তো একইভাবে আড়ালে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অতি দ্রুত তাঁদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করা হোক।’

এদিকে জোবায়েদ হত্যার প্রতিবাদে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর রাত ১১টার দিকে জোবায়েদ হত্যার বিচারের দাবিতে তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করেন তাঁরা।

বিক্ষোভ মিছিলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, ‘জোবায়েদ আমাদের সহযোদ্ধা ছিলেন। তাঁকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে মারা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতা আমাদের মনঃক্ষুণ্ন করেছে।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জোবায়েদ হত্যার প্রায় ছয় ঘণ্টা পার হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। জোবায়েদ হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক ছাড়ব না।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জোবায়েদ হত্যার বিচার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) এসেছে তদন্ত করার জন্য। পিবিআই রিপোর্ট দেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

এর আগে সন্ধ্যার পর রাজধানীর আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জোবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ভবনের একটি বাসায় তিনি টিউশনি করতেন। থাকতেন ফরাশগঞ্জের একটি মেসে। জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

Link copied!