আমিনুল ইসলাম, ভূঞাপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার কৃষকরা। যদিও এবছর অনাবৃষ্টির কারণে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা। পাট জাগ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তবে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি হয়েছে।
শুক্রবার(১৯ আগষ্ট) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় পানির অভাব হলেও চাষিরা পাট কেটে তা নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দিয়ে রেখেছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।
কেউ কেউ আঁশ ছাড়ানো, সেটা রোদে শুকিয়ে হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এবার উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরা খুশি। কৃষকের মুখে এখন হাঁসির ঝিলিক।
ভূঞাপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য তিন হাজার ৫০০শত টাকা মণ ও নিম্ন মানের পাটের মূল্য ৩ হাজার ২০০ টাকা মণ বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য পেয়ে পাট চাষীদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
গোবিন্দাসী হাটে পাট কিনছেন রংপুর থেকে আসা রবিউল ইসলাম জানান এবার অন্যান্য বছর থেকে পাটের বাজার অনেক ভালো। এক মন ভালো পাট সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০শত টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। কৃষক পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়লেও ভালো দাম পেয়ে তারা আনন্দিত। আরেকজন ব্যবসায়ী খন্দকার কাওসার জানান, কৃষক এবার পাটের দাম ভালো পাচ্ছে তাই কৃষকরা খুশি।উপজেলার এক কৃষক আজিম উদ্দিন বলেন, ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না।
উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রিয়াজ উদ্দিন কৃষক মো. আব্দুস ছামাদ জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পড়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ও ভালো হয়েছে। এবার আমি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম বাজারে পাটের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আগামি বছর আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবো বলে মনে করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ মৌসুমে উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর যমুনা চরাঞ্চল সহ উপজেলায় পাটের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পাটের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের মাঠ দিবস ও বিভিন্ন পরামর্শসহ বিনামূল্যে সার ও বীজ দিয়েছি। আমাদের উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে নিয়মিত পরিদর্শন ও কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। এবছর পাটের দাম ভালো হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি জমিতে পাটের আবাদ হবে বলে আমি আশাবাদী।