বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৫ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ প্রথমবারের মত জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারের তিক্ত স্বাদ পেল। এর আগে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যে মোট ৬ টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরমধ্যে ৩ টি জয় পেয়েছিল টাইগাররা আর বাকি ৩ টি সিরিজ হয় ড্র। হারারেতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৭ রানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ৭ উইকেটের জয় পায়। সিরিজ সমতায় আনার পর শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে টাইগাররা হারল ১০ রানে।
এরআগে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৬ রান করে জিম্বাবুয়ে। ১৩ ওভার পর্যন্ত বাংলেদেশি বোলারদের আক্রমণে চাপে ছিল জিম্বাবুয়ে। ১৩ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৬৭। সেখান থেকে এক লাফে ১৮ ওভারে ১৪৬! ৩১ বলে ৭৯ রান যোগ করে এই রান করেন বার্ল-জংওয়ে। তারমধ্যে নাসুমের ১ ওভারেই বার্ল নেন ৩৪ রান! ২৭ বলে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন বার্ল। শেষ দুই ওভারে লাগাম টেনে ধরেন হাসান-মোস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে বার্ল-জংওয়েকে ফেরান হাসান আফিফ ক্যাচ মিস না করলে শেষ ওভারের শেষ বল উইকেট পেতে পারতেন মুস্তাফিজ। উলটো তিন রান নেয় জিম্বাবুয়ে। ধুঁকতে থাকা জিম্বাবুয়ে পায় লড়াকু পুঁজি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন মেহেদী হাসান। নাসুম ২ ওভারে ৪০ রান দেন।
জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৫৭ রানের তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম বলে ডাবল নিয়ে রানের খাতা খোলেন। তৃতীয় বলে ডিপ পয়েন্টে দারুণ চার। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে আবার চার। এভাবে দারুণ শুরুর পরও লিটনকে থেমে যেতে হলো শুরুতেই, নাইউচিকে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ৬ বলে ১৩ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর অভিষেক রাঙাতে পারলেন না পারভেজ, ফিরলেন ২ রানে অভিষেক ম্যাচে ২ রানের বেশি করতে পারলেন পারভেজ হোসেন ইমন। টাইমিংয়ে গড়বড় করে নাইউচির বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ইমন। ৬ বলে ২ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ। ক্রিজে নতুন ২ ব্যাটসম্যান বিজয়-শান্ত।
এদিন ১৩ বলে ১৪ রানে বোল্ড হয়ে আবারও বার্থ হয় এনামুল হক বিজয়। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোল্ড হন ১৩ বলে ১৪ রান করে। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। মাধেভেরের নিচু হয়ে যাওয়া বলে পুল করতে চেয়েছিলেন বিজয়। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে স্ট্যাম্পে আঘাত করে। এর আগের দুই ম্যাচেও ফিরেছেন সেট হয়ে। প্রথম ম্যাচে ২৭ বলে ২৬ রান করেন, যা রানরেটের সঙ্গে ছিল বেমানান। দ্বিতীয় ম্যাচে আউট হন ১৫ বলে ১৬ করে। ক্রিজে এখন শান্তর সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৫ রান।
মাহমুদউল্লাহর পর শূন্য রানে আউট মোসাদ্দেক। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ইভানসের বলে জায়গা থেকে সরে অফ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বল কানায় লেগে যায় উইকেটের পেছনে। ২৭ বলে ২৭ করে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে এসেই পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মোসাদ্দেক। শূন্য রানে ফেরেন তিনি। ২ রানে ২ উইকেট নেন ইভানস। ক্রিজে আফিফের সঙ্গী মেহেদী। এ জুটি এখন শেষ ভরসা। ১৫.১ ওভারে বাংলাদেশের ১০০ হয়। জয়ের জন্য ১৮ বলে ৩৭ রান প্রয়োজন।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৯ রান। ক্রিজে ছিলেন আফিফ ও হাসান। আফিফ ৩৩ ও হাসান ৩ রানে ব্যাটে ছিলেন। পরে হাসান আউট হলে মাঠে নামেন নাসুম। শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও পরাজিত হয় বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ১০ রানে জিতে জিম্বাবুয়ে। হারারের ব্যাটিং উইকেটে ১৫৭ বড় কোনো লক্ষ্য নয়। কিন্তু বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের নিয়মিত বিরতিতে আসা যাওয়ার মিছিলে সেটি করতেই ব্যর্থ হয় সফরকারীরা। বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৮ উইকেটে ১৪৬ রানে। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন নাইউচি। ২৮ বলে ৫৪ রান করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া বার্ল ম্যাচ সেরা হন। ১২৭ রান ও ২ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন রাজা।