বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

আপডেট
দুই দিনের রোমাঞ্চে বাংলাদেশকে হারালো ভারত

দুই দিনের রোমাঞ্চে বাংলাদেশকে হারালো ভারত

দুই দিনের রোমাঞ্চে বাংলাদেশকে হারালো ভারত

অনলাইন ডেস্ক: কানপুর স্টেডিয়ামে রেকর্ড রান তাড়া করে জিততে হতো ভারতকে। কিন্তু সেই রেকর্ড ভারতের জন্য খুব একটা অসাধারণ ছিল না। এই মাঠে আগের সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড ৮৩। আর এই টেস্টে ভারতের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য ৯৫ রান। খেলার বাকি দুই সেশন। রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই দুই উইকেট হারলেও খুব বেশি চিন্তা করতে হয়নি তাদের। তরুণ ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল আর অপরপ্রান্তে অভিজ্ঞ বিরাট কোহলি ঠিকই ভারতকে নিয়ে গেলেন জয়ের বন্দরে। কানপুরের বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্টে খেলা হলো সর্বসাকুল্যে আড়াই দিন। স্বাগতিকদের দারুণ বোলিং-ব্যাটিং আর আগ্রাসী পরিকল্পনাতেই ভারত আরও একবার প্রমাণ করল কেন তারা টেস্টের নাম্বার ওয়ান টিম। কানপুরে টাইগারদের হারাল ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এর আগে চেন্নাই টেস্টেও সফরকারীদের হারতে হয়েছিল ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে। দুই ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হলো নাজমুল হোসেন শান্ত বাহিনী। ম্যাচের চিত্রনাট্য লেখা হয়ে গিয়েছিল গতকাল (সোমবার) কানপুর টেস্টের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনের পরেই। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৫ ওভার ব্যাটিং করেই বাংলাদেশের ২৩৩ রান টপকে ৫২ রানের লিড নিয়ে নেয় ভারত। মারকাটারি ব্যাটিংয়ের সুবাদে টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ৫০, ১০, ১৫০, ২০০ এবং ২৮৫ রানের বিশ্বরেকর্ড নিজেদের করে নেয় ভারত। শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে ২৬ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

৫ম দিনের সকালে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল যতটা সময় ব্যাট করে যাওয়া। ম্যাচে হারের বদলে ড্র আনতে চেয়েছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। কিন্তু, ভাগ্যটাই যে বাংলাদেশের পক্ষে নেই। এর আগে ২০২১ সালে পাকিস্তান এবং ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্ট হেরেছিল বাংলাদেশ। ৫ম দিনে সেটারই চিত্রনাট্য টাইগাররা লিখেছে আরেকবার। দিনের তৃতীয় ওভারে মুমিনুল হকের উইকেট বাদ দিলে প্রথম ১৫ ওভার বাংলাদেশ খেলেছিল বেশ ভালোই। ওপেনার সাদমান ইসলাম এবং নাজমুল হোসেন শান্ত দুজন মিলে গড়েছিলেন ৫৫ রানের জুটি। ভারতের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশি ওপেনার হিসেবে ফিফটিও পেয়ে যান সাদমান। তবে সাদমানের ফিফটির ঠিক আগেই বাংলাদেশের ইনিংসে আসে ধাক্কা। রবীন্দ্র জাদেজাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে বল পাননি শান্ত। বল আঘাত করে স্ট্যাম্পে। ৯১ রানে বাংলাদেশের তৃতীয় উইকেটের পতন। এখান থেকেই বাংলাদেশের ধসের শুরু। ৯১ রানে ২ উইকেট থেকে বাংলাদেশের স্কোর হয় ৯৪ রানে ৭ উইকেট। মাঝে ৩ রান তুলতেই নেই ৫ উইকেট। আকাশ দীপের বলে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে জয়সওয়ালের হাতে ক্যাচ দেন সাদমান। লিটন এসেছিলেন। ১ রানের বেশি করা হয়নি তারও। জাদেজার লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে ঋষভ পান্তের হাতে। এই বিপর্যয়ের শেষ উইকেট সাকিব আল হাসানের। ২ বলে শূন্য করে ফেরেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার।

জাসপ্রিত বুমরাহর গুড লেংথ বলটিতে মিরাজের ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার পান্তের গ্লাভসে। বাংলাদেশের ইনিংসে ৮ উইকেটের পতন। খানিক পরে তাইজুলও ফিরে যান সেই বুমরাহর বলে। এবারের আউট এলবিডব্লিউ। শেষ উইকেটে খালেদ আহমেদের সঙ্গে অনেকটা সংগ্রাম চালিয়ে যান মুশফিকুর রহিম। তবে লাভের লাভ খুব একটা হয়নি। দলীয় ১৪৬ রানে বুমরাহর ইনসুইং ডেলিভারিতে বোল্ড হলেন মুশফিক। বাংলাদেশের লিড তখন মোটে ৯৪। ব্যাট করতে নেমে সেই আগ্রাসী সূচনাই করে ভারত। রানতাড়ায় প্রথম ২ ওভারে ১৮ রান দেওয়ার পর তৃতীয় ওভারে উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ওভারের প্রথম বলে লং লেগে হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দিয়েছেন রোহিত। নতুন ক্রিজে শুভমান গিলকে এলবিডব্লু করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিরাট কোহলিকে নিয়ে এরপরের কাজটা সহজেই শেষ করেছেন যশস্বী জয়সওয়াল। পেয়েছেন ফিফটি। দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে। অবশ্য ম্যাচ শেষ করা হয়নি তার। জয় থেকে তিন রান দূরে থাকতেই বিগ শট খেলতে গিয়ে হয়েছেন আউট। ঋষভ পান্ত শেষ পর্যন্ত নিলেন উইনিং রান। ব্যাটিং-বোলিং আর মাঠের বাইরের প্ল্যানিংু সবখানেই দাপট দেখিয়ে ভারত টেস্ট জিতল ৮ উইকেটের ব্যবধানে। সঙ্গে ম্যান ইন ব্লুদের বিপক্ষে বাংলাদেশেরও টেস্ট ফরম্যাটে জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরও কিছুদিনের জন্য।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |