বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় সামিটের আজিজ খান

সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় সামিটের আজিজ খান

এশিয়ার নিরাপদ স্বর্গ হিসাবে পরিচিত সিঙ্গাপুরের চলতি বছরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। দেশটির শীর্ষ ধনীর এই তালিকায় আবারও জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি কোম্পানি সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান।

বুধবার ফোর্বস সিঙ্গাপুরের ৫০ ধনীর যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে ৪২তম অবস্থানে রয়েছেন মুহাম্মদ আজিজ খান। বাংলাদেশি নাগরিক আজিজ মুহাম্মদের সিঙ্গাপুরে ব্যবসা রয়েছে। দেশটিতে এক যুগ ধরে বসবাস করে আসছেন তিনি।

মুহাম্মদ আজিজ খানের প্রোফাইলে ফোর্বস লিখেছে, মুহাম্মদ আজিজ খান প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় জায়গা পেয়েছিলেন ২০১৮ সালে। এরপর এবার প্রথমবারের মতো তিনি সিঙ্গাপুরের বিলিয়ন ডলারের ক্লাবে ঢুকে পড়েছেন। ২০১৮ সালে তার সম্পদের পরিমাণ ৯১ কোটি মার্কিন ডলার ছিল। আর কয়েক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে এ বছর ১০০ কোটি মার্কিন ডলার হয়েছে।

ফোর্বস বলছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুহাম্মদ আজিজ খান বিদ্যুৎ কোম্পানি সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান। সামিটের বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিকস এবং রিয়েল স্টেট ব্যবসা রয়েছে। মার্কিন এই সাময়িকী বলছে, ২০১৯ সালে জাপানের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেরা মুুহাম্মদ আজিজ খানের সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ২২ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। যে কারণে ওই বছর তার সম্পদের পরিমাণ কমে যায়।

ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, মুহাম্মদ আজিজ খানের কোম্পানি সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত। বর্তমানে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন আজিজ খানের মেয়ে আয়েশা। বাংলাদেশেও এই কোম্পানির ব্যবসা রয়েছে। তবে সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত হওয়ায় এর সম্পদের হিসেব-নিকেশ সেখানেই হয়।

তিন সন্তানের বাবা মুহাম্মদ আজিজ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। সেনা কর্মকর্তার ছেলে পড়াশুনার পর অবকাঠামো খাতের ব্যবসা শুরু করেন। ট্রেডিং ফার্ম হিসেবে সামিটের যাত্রা শুরু হলেও পরে অবকাঠামোতে মনোযোগ দেয় কোম্পানিটি।

ফোর্বস বলছে, মুহাম্মদ আজিজ খান ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় ঢুকে যান। ওই বছর তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯১ কোটি মার্কিন ডলার। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সাল তার সম্পদ কমে ৮৫ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়। ২০২০ সালে আবারও তার সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ৯৫ কোটি ছাড়িয়ে যায়।

এর পরের দুই বছরে তার সম্পদ আরও বেড়ে যায়। ২০২১ সালে মুহাম্মদ আজিজ খানের সম্পদ বেড়ে ৯৯ কোটি ডলার হয়। আর তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে সামিট পাওয়ারের এই চেয়ারম্যান প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরের বিলিয়ন ডলারের ধনীর ক্লাবে ঢুকে যান। ফোর্বস বলছে, চলতি বছরে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানের সম্পদের পরিমাণ ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে কর ফাঁকির ১ কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি ফাঁস করেছিল।

বিশ্বজুড়ে পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি নামে পরিচিত আইসিআইজের কর ফাঁকির সেই তালিকায় সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান ও তার পরিবারের নামও পাওয়া যায়। তবে সেই সময় আজিজ খান ও তার পরিবার কোনও ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করে সামিট কর্তৃপক্ষ।

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ফারুক খানের ভাই মুহাম্মদ আজিজ খান। সরকারের ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ফারুক খান।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |