রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, বিশেষ করে ডলারের সংকটে বাজার এখন অস্থিতিশীল। ডলার মজুত ও পাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিচালনা করছে অভিযান। আকাশপথেও কেউ যেন বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করতে না পারে সেজন্য বেড়েছে নজরদারি। বিদেশগামী যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশি করা হচ্ছে বাড়তি সর্তকতা নিয়ে।
ডলারের বাজারের অস্থিতিশীলতার জন্য মজুত ও পাচার অন্যতম। এ কারণে শক্ত অবস্থানে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সুফল মিলেছে। অন্যদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের বাকি ২টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নজরদারি বেড়েছে।
জুন থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বিমানবন্দরে একাধিক যাত্রী অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের সময় আটক হয়েছেন। ২ জুন ৩০ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারসহ যুক্তরাষ্ট্রে যাবার সময় আটক হন মাহমুদা ফিরোজ নামের একযাত্রী। একই দিনে ২ লাখ মার্কিন ডলারসহ ইস্তানবুলগামী যাত্রী মেহেমেত রেমজি ক্যালিক আটক হয়েছেন। ১৬ জুন ৭০ হাজার ২৯৩ কাতারি রিয়েলসহ আটক হয়েছেন মুন্না নামের যাত্রী। ১৮ জুন ১২ লাখ ৪৫ হাজার ভারতীয় রূপিসহ আটক হন আরও একজন। ৩১ জুলাই ১ লাখ ৫ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ১ আগস্ট ৩২ হাজার ২৫০ মার্কিন ডলার, ৫ আগস্ট ১ লাখ ৭ হাজার ৯০০ রিয়েল, ৬ আগস্ট ১ লাখ ৩ হাজার মার্কিন ডলার , ৮ আগস্ট ২০ হাজার ইউরো, ২৪ হাজার ৭১০ মার্কিন ডলার, ৭৪৫ তার্কিশ লিরাসহ যাত্রী আটক হয়েছে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে ডলার নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেই সুযোগে কেউ যেন পাচার করতে না পারে সে বিষয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি লাগেজ তল্লাশি করা হচ্ছে কঠোরভাবে। বিমানবন্দরের মানি একচেঞ্জ বুথগুলোতেও নজরদারি বেড়েছ অবৈধ লেনদেন ঠেকাতে।
সম্প্রতি ৪২টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানকে ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৩টি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত হয়েছে। পাঁচটি দেশি ও একটি বহুজাতিক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, কেউ বৈদেশিক মুদ্রা যেন পাচার করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে সম্প্রতি মুদ্রা পাচারের ঘটনা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। কোনভাবেই দেশ থেকে মুদ্রা পাচার হতে দেওয়া হবে না। যাত্রী যেই হোক, তাকে তল্লাশির মধ্য দিয়েই যেতে হবে।