সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
সাকিব আল হাসান রুবেল:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার অধিকাংশ সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার কাঁচা পাকা প্রায় ৭৬ টি সড়ক সংস্কারের জন্য প্রতি বছর বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ হয়ে যায়।
দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় ভাঙা চোরা রাস্তাগুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উপজেলার ৬ ইউনিয়নের জনসাধারণ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা গুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভাঙ্গাচুরা রাস্তাগুলোর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত যানবাহন গুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই কর্মজীবি মানুষ, শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী, কৃষি ফসলসহ সরকারি বিভিন্ন সেবা ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে হাট-বাজারের আসতে হয় উপজেলার সদরে।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, কোথাও রাস্তার মাঝখানের পাথরসহ খোয়া উঠে বড় বড় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, লজিক প্রকল্প, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রকল্প দেওয়া হলেও নাম মাত্র কাজ করে । কলাবাড়ি গ্রামের এমাদাদুল হক জানান, যাদুরচর ইউনিয়নে কাঁচাপাকা মিলে মোট ৪৮কি.মি. রয়েছে। বেশির ভাগ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে। মেরামতের কোনো খবর নেই।শৌলমারী গ্রামের মো. মশিউর রহমান বাবু জানান, এই সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ মানুষ হেটে চলাফেরা করতে পারছেনা।
গ্রামীণ এই রাস্তাগুলো বেহালদশা হওয়ার কারনে বিশেষ করে কৃষি প্রধান এই অঞ্চলের কৃষকরা বছরের পর বছর কৃষিপণ্য ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। অপর দিকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে গ্রামীণ জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করার কোন বিকল্প নেই। বর্তমান উন্নয়নের সরকার ক্ষমতায় আসার একযুগ পার হলেও গ্রামীণ এসব জনপদে আধুনিকতার কোনা ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। যে কারনে গ্রামগুলোতে শহরের সুযোগ সুবিধা প্রদান করার সরকারের যে ভিশন তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
স্থানীয়রা মনে করছেন গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নের জন্য সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকার যে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে আসছে, সেই বরাদ্দ গুলো শুধুমাত্র কাগজে নামকাওয়াস্তে দেখিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সীমাহীন লুটপাটের কারনে এই উন্নয়নমুলক কাজ বাস্তবে রুপ পাচ্ছে না। দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম , শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম , বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের, রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক , যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সরবেশ আলী,
চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল জানান, গত তিন বছরের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তা, ব্রীজ কালভার্ট, সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। রাস্তা গুলো চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলের মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।অনিয়মের কথা অস্বীকার করে রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, টিআর ও কাবিখা প্রকল্প দিয়ে কিছু রাস্তার কাজ করা হয়েছে। কিছু কাজ চলমান রয়েছে। বরাদ্দ অল্প থাকায় সব রাস্তার কাজ একসঙ্গে করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বাকি কাজগুলো করা হবে।