শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন

আপডেট
জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন

জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন

রাজধানীর গুলশান থানায় করা অস্ত্র আইনের মামলায় কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম তার সাত দেহরক্ষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় জি কে শামীমকে। যাবজ্জীবন পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- মো. জাহিদুল ইসালাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন। এরা জি কে শামীমের দেহরক্ষী।

গত ২৮ আগস্ট এই মামলায় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ওইদিনই আদালত রায়ের জন্য ২৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। জিকে শামীম ছাড়া এই মামলার অপর আসামিরা হলেন, তার সাত দেহরক্ষী মো. জাহিদুল ইসালাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।

২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি একই আদালত আসামিদের অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচারকালে মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। এরপর আত্মপক্ষ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এবার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।

এই মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন র‌্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক চন্দ্র শেখর মল্লিক।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে মর্মে আসামি আমিনুল ইসলাম কাগজপত্র দেখালেও তা যাচাইয়ের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তার অস্ত্রটি অবৈধ। তিনি ওই অবৈধ অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এস. এম. বিল্ডার্স কোম্পানিতে যোগ দেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জিকে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগ দিয়ে কাজ করে আসছিলেন।

তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় কিনে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। তাই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ক)/২১/২৩ ধারার অভিযোগসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮ ধারার অভিযোগ এনে পৃথক একটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

এছাড়া অন্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ঙ)/২১/২৩ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হলে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনে শামীমের বাড়ি ও অফিসে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, নগদ প্রায় এক কোটি ৮১ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ও মদ জব্দ করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানিলন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করা হয়।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |