শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

আপডেট
ইসলাম স্যাব জমি কিনে ঘর ন দিলে আ্যাই হনডে থাইকতাম ?

ইসলাম স্যাব জমি কিনে ঘর ন দিলে আ্যাই হনডে থাইকতাম ?

ইসলাম স্যাব জমি কিনে ঘর ন দিলে আ্যাই হনডে থাইকতাম ?

শহীদুল ইসলাম

দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি বিশাল বিশাল শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক। সাধা সিধে নিরহঙ্কাকারী মানুষ। গ্রামের সুদূর কোনে গিয়ে পাওয়া গেল তার প্রশংসার কথা। গ্রামের অনেক মানুষ ছিলেন গৃহহীন। মাথাগোজার ঠাঁই ছিলনা দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার জোগান। মলীন মুখে মানুষের পানে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতো পরিবারের ছেলেবুড়োরা।

তাদের এই কোমল চেহারা একদিন চোখে পড়ে নুরুল ইসলামের। সুদর্শন সুশ্রি মায়াভরা চেহারার ফুরফুরে মানুষটি দেশের বিখ্যাত নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। অনেক বড়লোক আছেন লোক দেখানো ঘটা করে দরিদ্রদের পাশে দাড়িয়ে পত্রিকায় প্রচার করেন। তার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিজে গিয়ে তাদের মুখে শুনে দেখে এসেছেন। স্বপ্ন বুনেছেন, সামান্য আয়ের মানুষ থেকে কি করে দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিক হওয়া যায়। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছেন। অসহায় দরিদ্র মানুষের মুখে স্বচ্ছল হওয়ার স্বপ্ন বুনে দিয়েছেন নুরুল ইসলাম। চট্রগ্রাম জেলার লোহাগাড়া ইউনিয়নের আধুনগর গিয়ে জানা গেল, সেখানকার অধিবাসী ২১২ জনের পরিবার।

এই পরিবারের জন্য জমি ক্রয় করে একতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন। পরিবারের এরা আজ স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম এইসব অসহায় ছিন্নমূল মানুষকে জমি কিনে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। সেখানকার বাসিন্দারাও এখন নুরুল ইসলামের মত স্বপ্ন দেখেন।

নুরুল ইসলামের মত কিছু একটা করে অনুকরণীয় অনুসরনীয় মহানুভব মানুষ হওয়ার। শুধু-ই-কি ঘর ! এলাকায় ২০টি অধিক মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা , শিক্ষক ও শিক্ষাথীদের বসবাসে আবাসিক ভবন, বোর্ডিং , এলাকার নামে আধুনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন ছাড়াও কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন লোহাগাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ চার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ, আধুনগর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ছয়তলা ভবন শুধু ছাত্রীদের জন্য , ছাত্রদের জন্য আবাসিক ভবন ৫তলা, মসজিদ, এতিমদের খাওয়া- দাওয়ার ব্যবস্থা ,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মরহুম মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদীন পিএসসি নামে একটি ছয়তলা বিশিষ্ট স্কুল ভবন যার নির্মাণ ব্যয় হয় প্রায় ৬ কোট টাকা, সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুদান দিয়ে আলহাজ্ব মোঃ নুরুল ইসলাম। এ ছাড়াও নিজ নামে এবং স্ত্রীর নামেসহ অনেক প্রতিষ্ঠান গড়েছেন।

গ্রামের অনেক এতিম মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা ব্যয় খরচ বহন করেন। অনেককে নিজের প্রতিষ্ঠান চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অসুখে , বিয়ে, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে, মসজিদ মাদ্রাসায় দান, কবরস্থান সংস্কার নির্মাণ করে দিয়েছেন ।

প্রতি রমজান ঈদে অসহায় পরিবারদের মাঝে জনপ্রতি একবস্তা চাল, ঈদ সামগ্রী, কাপড়, লুঙ্গি বিতরণ করেন। কোরবাণীর ঈদে চাহিদা অনুয়ায়ি গরু ক্রয় করে জবাই দিয়ে তা সমভাবে বন্টন করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা-মাতাকে সহায়তা, বেকার যুবকদের অল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় সহায়তা, রিকশা-ভ্যান দিয়ে সহায়তা, বিধবা নারীদের সেলাই মেশিন, আবাসন ব্যবস্থা, টিউবওয়েল ইত্যাদি দিয়ে সহায়তা করে থাকেন। শিক্ষা ও সামাজিক সংস্কারে ব্যয় করার জন্য এই অঞ্চলে তিনি দানবীর হিসাবেও সমধিক পরিচিত।

গম্প্রতি নোমান গ্রুপ নিয়ে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় । প্রতিবেদক উপরোক্ত বিষয়গুলির দুটি অভিযোগ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখি সম্পূর্ণ উল্টো। আলহাজ্ব মোঃ নুরুল ইসলাম নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা।
শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে তার সার্বিক অবদান রয়েছে। এলাকায় প্রখ্যাত সমাজসেবক, দানবীর ব্যক্তিত্ব হিসাবে। বহু দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে ও অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছেন জীবনের শুরুতে। জীবিকা নির্বাহের উদ্দেশ্যে ঢাকায় এসে ক্ষুদ্র কাজে নিয়োজিত হন। আজ তিনি সুনাম ধন্য নোমান গ্রুপ টেক্সটাইল, আরএমজি, ফ্যাশন, ডেনিম, টাওয়েল, ওয়ার্প কাটিং, স্পিনিং, বয়ন, কাপড়, আবাসনেসহ দেশের উন্নয়ন ও মানবতার কল্যাণে প্রচুর দান করেন, মানবতাধর্মী কাজে সম্পৃক্ত ।

মানবতার মূর্ত প্রতীক, শিক্ষানুরাগী, দানবীর । তিনি মানব সম্পদ গড়ার কারিগর । মানব কল্যাণই এখন যার ধর্ম। এতো সম্পদের মালিক হয়েও আলহাজ মোঃ নুরুল ইসলাম একজন ধার্মিক ও নিরহঙ্কারী। তিনি সর্বদা সহজ সরল জীবনযাপন করেন।

স্থানীয় আধুনগরের বাসিন্দা হাজেরা খাতুন প্রতিবেদককে জানান, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে স্বামী প্রতিবন্ধী। সংসারে ছিল খুবই অভাব । খাবারই জুটতো না । ইসলাম স্যাব জমি কিনে ঘর ন দিলে আ্যাই হনডে থাইকতাম ? আমি এখন সুখি মানুষ।

ইদ্রিস আলী জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় আমার একটি পা নষ্ট হয়ে গেছে। অসহায় হয়ে পড়ি। চার মেয়ে বিয়ের যোগ্য । ইসলাম স্যাব পাশে দাড়ান। সকল ব্যায় নির্বাহ করে মেয়েদের বিয়ে দেন। জমি কিনে পাকা বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন । এসব আমার স্বপ্নের মত মনে হয়।

আধুনগরের বাসিন্দা শিল্পি আক্তার বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামী আমাকে ফেলে রেখে চলে যায় । দুই ছেলে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। ইসলাম স্যাব চেয়ারম্যান সাবের মুখে শুনে আমাদের জন্য বিল্ডিং ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন । ছেলেদের লেখাপড়াসহ খরচ ব্যায় নির্বাহ করেন । চিনতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মরহুম জয়নাল আবেদীন পিএসসির নামে আমরা কয়েকজন মিলে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করি।

এই স্কুলটি টিনসেট থেকে পাকা নির্মাণ করতে গিয়ে নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম এই নির্মাণে অর্থনৈতিকভাবে ও নানাভাবে সহযোগীতা করেছেন যা শ্রদ্ধাভরে আমরা তাকে স্মরণ করি ।
প্রবীন শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন. ইসলাম সাব আমাদের এলাকায় শিক্ষা বিস্তারে প্রসার, পিছিয়ে পড়া ঝড়ে পড়া শিশুদের আলোর পথে ফিরিয়ে আনছেন ।উপজেলায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিয়েছেন । আমাদের এলাকায় রাস্তাঘাট উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন। যেকোন কাজে গেলে তার সহযোগীতা পাওয়া যায় । বিনিময়ে তিনি কথনও এমপি মন্ত্রী হতে চাননি ।

এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ।
মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, আমি মসজিদে ঈমামতি করে বেতন পাই পাঁচ হাজার টাকা । যা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। গত রমজান ঈদে ইসলাম স্যারের কাজে নাজিমউদ্দিন চেয়ারম্যান সাহেবের মাধ্যমে খবর পাঠাই। ঠিক দশদিন পরেই আমার বেতন বাড়িয়ে পনের হাজার টাকা করে নিয়মিত দেন ।

আমার এক মেয়েকে কামিল মাদ্রাসায় ফ্রিতে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেন ।
প্রবীন আবুল কামাল জানান, ইসলাম আমাদের অহংকার । বিগত পঁচিশ বছরে লোহাগাড়াসহ আশপাশ এলাকায় আমার জানামতে তিন শতাধিক মসজিদ ও মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে দিয়েছেন । লোহাগড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি আধুনিকায়নে তিনি প্রায় চার কোটি টাকা অনুদান ব্যয় করেছেন । এতে নয় হাজার মানুষ একসাথে নামাজ পড়তে পারেন ।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |