শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
রাজধানীর পল্লবী থানায় করা প্রতারণার মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।সোমবার (২০ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) একই ম্যাজিস্ট্রেট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজ (২০ মার্চ) দিন ধার্য করেন।মামলার অপর চার আসামি হলেন- জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কো-অর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার। ২০২১ সালের ২ অগাস্ট রাতে সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় এ প্রতারণার মামলা করেন।
সেখানে বলা হয়, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা। প্রতিবেদক হিসেবে রহমান কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। তার কাছ থেকে উল্টো প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা নিত টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলানা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম।
এরপর ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল আদালত দণ্ডবিধির ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় মোট ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার এবং জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন। নিজেকে তিনি আইপি টিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগেরও উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন।
‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি ‘ভূইফোঁড়’ সংগঠনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সভাপতি হওয়ার খবর চাউর হলে ২০২১ সালের জুলাই মাসে তাকে দুই কমিটি থেকেই বাদ দেয় আওয়ামী লীগ। এরপর ওই বছর ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, একটি হরিণের চামড়া, দুটি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, দুটি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার ৪৫৬টি চিপস জব্দ করা হয়। সেই রাতে মিরপুরে জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়েও অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে বিটিআরসির সহযোগিতায় অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়।
পরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সেসব মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। পরে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পান হেলেনা।