শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:আব্দুর রহমান শেখ। বয়স ৭২ বছর। এই বয়সেও তাকে রোজগার করতে হচ্ছে দু’মুঠো ভাতের জন্য। একাই ভাজেন জিলাপি, আবার বিক্রিও করেন। মাঝে মাঝে আশেপাশের ছেলেরা একটু সাহায্য করেন। জিলাপি বিক্রি করে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা আয় হয় তার। আর তা দিয়েই চলে সংসার।
আবদুর রহমান শেখের বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিবপুর গ্রামে। তার ভাষ্যমতে, ৫০ শতাংশ জমির মালিক তিনি। এই জমিতে সরকারিভাবে একটি বাড়ি বরাদ্দ পেয়েছেন। সেখানেই দিন শেষে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রামের জায়গা আছে। এভাবেই চলে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর।
আব্দুর রহমানের ২ ছেলে, ৪ মেয়ে। দুই ছেলেই ঢাকায় গার্মেন্টে কাজ করেন। খেয়ে-দেয়ে ভালোই আছেন তারা। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে কিন্তু ছেলেরা বৃদ্ধ বাবা-মাকে না দেখায় শেষ বয়সে বেকায়দায় পড়েন আব্দুর রহমান দম্পতি।
আব্দুর রহমানের সঙ্গে একদিন কথা হয় তার জিলাপির দোকানে। দোকানতো নয়, ভাঙাচোরা ঘরের একটা ভাঙা বারান্দা, যা শিবপুর রেলগেটের সন্নিকটে রেলের জায়গায় অবস্থিত। এ সময় আবেগতাড়িত কণ্ঠে আব্দুর রহমান শেখ বলেন, ‘দুই ছেলে ঢাকায় থাকে, তারা গার্মেন্টে কাজ করে। বউ ছেলেমেয়ে নিয়ে সেখানে থাকে। আমাদের দেখে না।’
আক্ষেপের পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে গর্ব করে বলেন, ‘১৩/১৪ বছর ধরে জিলাপি ভাজি। তবে গুড়ের জিলাপি। বোয়ালমারীতে একমাত্র আমিই গুড়ের জিলাপি ভাজি। আমার কাস্টমারের অভাব নেই। প্রতিদিন যে টাকা লাভ থাকে তাতে কোনোমতে সংসার চলে যায়।’
জীবিকা নিয়ে মুখে কথা বললেও থেমে থাকে না আব্দুর রহমানের হাতের কাজ। অভাব যে মানুষটার নিত্যসঙ্গী তার মুখের চওড়া হাসি দেখে তা বোঝা দায়।