শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
আলমগীর হোসেন,খাগড়াছড়িঃ পুরোনো বছর বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে পাহাড়ে চলছে সাজ সাজ বর। বৈসু-সাংগ্রাই-বিজু ও বাংলা নববর্ষের উৎসবে মেতেছে পাহাড়বাসী। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে উঠেছে বর্ষ বিদায় ও বরণ উৎসব। যা ‘বৈসাবি’ নামে পরিচিত।
বাংলা বর্ষের শেষ দিনে চাকমারা ‘ফুল বিজু’, ত্রিপুরা সম্প্রদায়েরা ‘হাঁরিবৈসু’ আর মারমা সম্প্রদায়ে ‘সূচিকাজ’ নামে পালন করে, যা ‘ফুল বৈসু/ফুল বিজু নামে পরিচিত। চেঙ্গী নদী হাজার হাজার মানুষের আগামনে মুখরিত হয়ে ওঠে। এ ফুল বিজু/বৈসুর দিনের চেঙ্গী পাড়ে ত্রিপুরা, চাকমা, মারমা ও বাঙ্গালি সম্প্রদায়ের নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে ফুল দিয়ে গঙ্গাদেবীকে প্রণাম জানাতে আসেন।
এ সময় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, জেলা পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া ফুলেল শ্রদ্ধা জানা। এরই মধ্য শুরু হয়েছে বৈসাবি’র আয়োজন। জলে ফুল দেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে এই উৎসব। ১৪ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায়ের ‘জলকেলি’র উৎসব হবে।
বুধবার সকালে খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হয় ফুল বিজু। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা বয়সী পাহাড়িরা মা গঙ্গাকে উদ্দেশে নদীতে পবিত্র ফুল দিয়ে প্রণাম জানান। উৎসবে নারীরা বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী রিনাই-রিসা, পিনোন-হাদি পরেন। আর ছেলেরা ধুতি, পাঞ্জাবি/ফতুয়া পরে চেঙ্গী নদীতে ফুল দিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন। ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে পুরোনো বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। তবে করোনার দুই বছরের বিষাদ ও বেদনা ভুলে আবারও প্রিয় বৈসাবি উদযাপন করতে পেরে খুশি।
জেলা শহরের খবং পড়িয়াস্থ চেঙ্গী নদীতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় চাকমা সম্প্রদায়ের এক প্রতিনিধি জানান, এটি পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের ঐহিত্যবাহী সামাজিক উৎসব।পুরোনো বছরের দুঃখ, গ্লানিকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরে সুখে, শান্তিতে এবং আনন্দে কাটাতে পারি সেজন্য মা গঙ্গা দেবীর কাছে প্রার্থনা করি।
চৈত্র মাসের শেষ দিনকে চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিজু। এর আগের দিনকে ফুল বিজু, আর পহেলা বৈশাখ পরিচিত গোজ্যেপোজ্যে/গজ্জ্যা পুজ্জ্যা দিন হিসেবে। পাড়ায় ঘুরে ঘুরে, খেয়ে দিনটি পার করেন চাকমারা। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন বৈসু পালন করা হয়। বিজু মানে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করা, সর্বোপরি বিজু মানে হলো মিলনমেলা। ঠিক তেমনি বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন বৈসু পালন করা হয়।
পি,কে মোঃ জোনাব আলী